মেমোরি কি এবং মেমোরির ধরন

মেমোরি কি এবং মেমোরির ধরন

আসলামুআলাইকুম , Blog Academy  এর পক্ষ হতে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।  আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় : মেমোরি কি এবং মেমোরির ধরন সম্পর্কে আমি কামরুজ্জামান রিফাত আলোচনা করছি। তো চলুন এবার শুরু করি। 

মেমোরির ভুমিকা 

মেমোরি কার্ড বা মেমোরি কার্টিজ হলো একটি ইলেকট্রনিক তথ্যভাণ্ডার ডিভাইস যা ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সাধারণত পোর্টেবল ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ট্যাবলেট, পোর্টেবল মিডিয়া প্লেয়ার, ভিডিও গেম কনসোল,পিডিএ,  ইলেকট্রনিক কীবোর্ড , সিন্থেসাইজার এবং ডিজিটাল পিয়ানোতে ব্যবহৃত হয়।

এটিকে মূলতও  সংরক্ষিত ন্যানোটেকনোলজি বলা হয়ে থাকে । অতঃপর বিভিন্ন তথ্য বা ডাটা  সংরক্ষণের নতুন সংযোজন যেটি কম্পিউটার থেকে বড় ছোট যেকোনো ধরনের ডিভাইসের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

মেমোরি কি?

যে যন্ত্রাংশের মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত, ছবি, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করা যায় তাকে কম্পিউটারের ভাষায় মেমোরি বা স্মৃতি বলে। এটি মানুষের মনের স্মৃতির মতো। এটি ডেটা এবং দিকনির্দেশ সঞ্চয় করতে ব্যবহার করা হয়।

মেমোরি কি

কম্পিউটার মেমোরি কি?

কম্পিউটার মেমোরি ‘কম্পিউটার স্টোরেজ ডিভাইস’ নামেও পরিচিত যা যেকোন তথ্য, গান, চলচ্চিত্র, ছবি, সফ্টওয়্যার ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ ডেটা সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে। এই সমস্ত ডেটা দুটি ভিন্ন মোডে সংরক্ষিত হয়।

একটি অস্থায়ী অন্যটি স্থায়ী প্রকৃতির। কম্পিউটার মেমোরিতে সমস্ত ডেটা ডিজিটাল আকারে সংরক্ষণ করা হয়। ব্যবহারকারীরা প্রয়োজনে যে কোনও সময় সংরক্ষিত তথ্য পুনরুদ্ধার করতে পারে এটি। 

কম্পিউটার মেমোরি কত প্রকার ও কি কি ?

কম্পিউটার মেমোরি তিন প্রকার যথাঃ    

  •  প্রাইমারি (PRIMARY )         
  • সেকেন্ডারি  (SECONDARY ) 
  •  ক্যাশ ( CACHE ) 

 প্রাইমারি মেমোরি (PRIMARY MEMORY)         

প্রাইমারি মেমোরিতে কেবল সেই তথ্য এবং নির্দেশিকা ধারণ করে যার উপর পিসি এখন কাজ করছে। এটির একটি সীমাবদ্ধ সীমা রয়েছে এবং জোর বন্ধ করা হলে তথ্য হারিয়ে যায়। এটি সাধারণত অর্ধপরিবাহী গ্যাজেট সমন্বিত। এই পুনরুদ্ধারগুলি নিবন্ধগুলির মতো দ্রুত নয়।

তথ্য প্রস্তুত করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা এবং মৌলিক স্মৃতিতে বাঁচে। এটি দুটি উপশ্রেণীতে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে যথাঃ  

  • র‌্যাম(RAM) 
  • রম(ROM)

RAM ( Random Access Memory)

RAM

কম্পিউটার ডেটা স্টোরেজের একটি ফর্ম যা বর্তমানে ডেটা এবং মেশিন কোড সংরক্ষণ করে। এটি ডিভাইস ডেটা আইটেমগুলি ভিতরে থাকা মেমোরিতে তথ্যগুলির প্রকৃত অবস্থান ব্যতীত প্রায় একই পরিমাণে পড়তে বা লিখিত করতে দেয়।

RAM আবার দুই প্রকার যথাঃ 

  • SRAM   
  • DRAM

SRAM

SRAM হচ্ছে ট্রানজিস্টর দ্বারা লজিক সার্কিটের মাধ্যমে ফ্লিপ-ফ্লপ মেমোরি। এটি আবার s-r flip-flop, jk-flip-flop, D-flip-flop, t- flip-flop ইত্যাদিতে ভাগ করা যায়।

DRAM

DRAM হচ্ছে ক্যাপাসিটরে বিদ্যুৎ সঞ্চয় নীতির দ্বারা তৈরি স্মৃতি। এগুলো মূলত বিট মেমোরি হিসাবে কাজ করে।

ROM (Read Only Memory)

Read Only Memory (ROM) কম্পিউটার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলিতে ব্যবহৃত একটি অ-উদ্বায়ী মেমোরি । ROM এ সংরক্ষিত ডেটা কেবলমাত্র ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই এটি প্রধানত ফার্মওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন সফ্টওয়্যার প্লাগ-ইন কার্টিজগুলিতে সংরক্ষণ করতে ব্যবহৃত হয়। 

ROM

সেকেন্ডারি মেমোরি (SECONDARY MEMORY)

এটিকে অন্যথায় বাইরের মেমোরি বা অ-অস্থির বলা হয়। এটি মূল নীতিটির চেয়ে বেশি ধীর। এগুলি চিরতরে তথ্য / ডেটা ফেলে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটার প্রসেসর সোজাভাবে এই পুনরায় সংগ্রহগুলি পায় না, বরং তথ্য উপার্জনের সময়সূচীর মাধ্যমে সেগুলি অর্জন করে। উদাহরণস্বরূপ, প্লেট, সিডি-রম, ডিভিডি এবং আরও অনেক কিছু।

সেকেন্ডারি মেমোরিকে মূল কম্পিউটারে লাগানোর ভিক্তিতে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ 

  • স্থায়ী           
  • পোর্টেবল 

স্থায়ী মেমোরি

হার্ড ড্রাইভ, SSD ড্রাইভ এই মেমোরির অন্তর্ভুক্ত। এটি  খুলে রাখা গেলেও তা কম্পিউটারে সার্বক্ষনিক লাগিয়ে রাখতে হয়। আধুনিক কালের কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমের সকল ফাইল এই মেমোরিতে জমা থাকে।কম্পিউটার চালু করা হলে প্রয়োজনীয় অপারেটিং সিস্টেম ফাইল হার্ড ড্রাইভ থেকে মূল মেমোরি র্যামে যায়। একে কম্পিউটার বুটিং বলে।

 কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

  • HDD 
  • SSD

(HDD) হার্ডডিস্ক কি?

HDD হার্ডডিস্কে ম্যাকানিকেল ডিস্ক বলা হয়। এই হার্ডডিস্কে চৌম্বকীয় ডিস্কের মাধ্যমে তথ্য জমা থাকে। যেহেতু HDD হার্ডডিস্ক ম্যাকানিকেল ও চৌম্বকীয় ডিস্ক থাকে তাই নস্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বর্তমান সময়ে ৮ টেরাবাইট পর্যন্ত HDD হার্ডডিস্ক পাওয়া যায়।

হার্ডডিস্ক

(SSD) সলিড স্টেট ড্রাইভ

কম্পিউটারের মেমোরির মধ্যে SSD হচ্ছে একটি উন্নত মানের সংস্করন। SSD পূর্ণরূপ হলো সলিড স্টেট ড্রাইব, এটি একটি ফ্ল্যাশ ভিত্তিক  টেকনোলজি, HDD থেকে SSD তে অনেক বেশি রিড-রাইড স্পিড পাওয়া যায়।

SSD ব্যবহারে অনেক সুবিধা রয়েছে, যেহেতু এটি ফাস্ট কাজ করে এবং এর মধ্যে ডাটা দীর্ঘদিন যাবত নষ্ট হয় না। দাম কমার ফলে বর্তমানে সব কম্পিউটারেই এখন SSD ব্যবহার করা হচ্ছে। একসময়  HDD হার্ডডিস্কের জায়গাটা SSD দখল করে নিবে।

পোর্টেবল মেমোরি

এইটি  যখন খুশি খোলা লাগানো যায় এমনকি কম্পিউটার চালু অবস্থায় খোলা যেতে পারে। এ ধরনের মেমোরি ব্যবহার হয় মূলত পার্সোনাল ফাইল সঙ্গরক্ষন ও পরিবহনের জন্য। যেমন পোর্টেবল হার্ড ড্রাইভ, পেনড্রাইভ বা ফ্লাশ ড্রাইভ, যেকোন রিমোভেবল মেমোরি এর অন্তর্ভুক। সিডি, ডিভিডি, ব্লু-রে ইত্যাদিও এই মেমোরি অন্তর্ভুক্ত যদিও এগুলোকে ROM হিসাবে চিহ্নিত করা হয়।

ক্যাশ মেমোরি( CACHE  MEMORY) 

প্রসেসরের সঙ্গে যুক্ত পৃথক মেমোরিকে ক্যাশ মেমোরি বলা হয়। ক্যাশ মেমোরিকে আবার সিপিইউ মেমোরিও বলা হয়। কম্পিউটারের গতি নির্ভর করে ক্যাশ মেমোরির উপর। এটি অনেকটা র‌্যামের মতোই কাজ করে। প্রসেসর যখন কোনো কাজ করে তখন তথ্য ক্যাশ মেমোরিতে সংরক্ষিত থাকে। কম্পিউটারে পাঠানো কমান্ড এবং ছোটখাট তথ্য সংরক্ষণে এটি ব্যবহৃত হয়।

ক্যাশ মেমোরি একটি অত্যন্ত দ্রুত অর্ধপরিবাহী মেমোরি যা সিপিইউকে(CPU ) ত্বরান্বিত করতে পারে। এটি সিপিইউ এবং নীতিগত মেমোরির মধ্যে সমর্থন হিসাবে চলে। এটি সেই তথ্য এবং প্রোগ্রামের টুকরোগুলি ধরে রাখতে ব্যবহার করা হয় যা প্রায়শই সিপিইউ দ্বারা ব্যবহৃত হয়। তথ্য কাঠামো এবং প্রকল্পগুলির টুকরোটি বৃত্ত থেকে কর্ম কাঠামোর দ্বারা মেমোরি সংরক্ষণ করতে সরানো হয়, সেখান থেকে সিপিইউ তাদের কাছে যেতে পারে।

মেমোরি পরিমাপের একক :

কাজের ধরন অনুযায়ী কম্পিউটারে বিভিন্ন আকারের মেমোরি ব্যবহার হয়ে থাকে। এটি পরিমাপের বিভিন্ন একক ব্যবহৃত হয়, যেমন বিট, বাইট, কিলোবাইট, মেগাবাইট, গিগাবাইট ইত্যাদি। কম্পিউটার বাইনারী ডিজিট ধারণের ক্ষমতাকে মেমোরির ধারণ ক্ষমতা হিসাব করা হয়।

তথ্য ধারন ক্ষমতার ক্ষুদ্রতম একক হল কিলোবাইট, কিলোবাইটকে kb দ্বারা প্রকাশ করা হয়। বর্তমানের হার্ডডিস্কের ধারণ ক্ষমতা1024 গিগাবাইট থেকে টোরাবাইট হয়ে থাকে।এছাড়াও আমরা নানা রকম কাজে এক্সট্রনাল মেমোরি ব্যবহার করে থাকি, যেমন  পেনড্রাইব,মাইক্রো এসডি কার্ড, ডিভিডি ডিস্ক ইত্যাদি।

কম্পিউটারের কাজের প্রকৃতি ও গতির বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন আকারের মেমোরি ব্যবহৃত হয়। যা পরিমাপের জন্য বিভিন্ন একক ব্যবহৃত হয়। যেমন- বিট, বাইট, কিলোবাইট, মেগাবাইট, গিগাবাইট ইত্যাদি।

(Bit) বিট কি কাকে বলে:

বাইনারী সংখ্যা পদ্ধতিতে 0 এবং 1 কে বিট বলে। ইংরেজি বাইনারী শব্দের Bi ও Digit শদের t নিয়ে Bit শব্দটি গঠন করা হয়েছে। এবং ডিজিটাল কম্পিউটারের মেশিন ভাষা হলো বিট 0 এবং 1,  এখানে 1 দিয়ে হাই ভোল্টেজ  এবং 0 নিয়ে নিম্ন ভোল্টেজ  নির্দেশ করা হয় থাকে।

(Byte) বাইট কি কাকে বলে:

একবাইট সমান আট বিট। এমন ভাবে  ৮ বিটের কোড দিয়ে সকল ধরনের  বর্ণ, অংক বা বিশেষ চিহ্ন প্রকাশিত  হয়ে থাকে। এমন আট বিট বিশিষ্ট শব্দকে বাইট বলা হয়। কম্পিউটারের মেমোরি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন এককের মধ্যে সর্ম্পক

 

  • 8 বিট                    = 1 বাইট
  • 1024 বাইট            = 1 কিলোবাইট
  • 1024 কিলোবাইট = 1 মেগাবাইট
  • 1024 মেগাবাইট    = 1 গিগাবাইট
  • 1024 গিগাবাইট  = 1 টেরাবাইট
  • 1024 টেরাবাইট    = 1 হেক্সাবাইট  

আশা করি এই আর্টিকেলটিতে আমি মেমোরি সম্পর্কে যেসব বিষয় আলোচনা করেছি তা হয়তো আপনাদের ভাল লেগেছে। যদি ভালো লাগে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন আর যদি এমন কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হয় সেটিও নিচে কমেন্ট করবেন ধন্যবাদ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *