আসলামুআলাইকুম, Blog Academy তে লিখছি আমি কামরুজ্জামান রিফাত, আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়, বিভিন্ন ইফতার আইটেম সম্পর্কে ।
পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব ও মহিমা আপরিসীম। রোজা মহান আল্লাহ তালার জন্য মুসলিম উম্মাহের ফরজ ইবাদত, সারা বিশ্বের মুসলিমদেশগুলোতে রমজান মাস এলে সকল মুসলিম রমজানে রোজার সকল প্রস্তুতি গ্রহন করেন।
যেমন নিজেদের দৈনন্দিন কার্যাবলীর সময়সূচির মধ্যেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। রমজান এলে বিকাল বেলা থেকেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন প্রকার ইফতার আইটেম খাবার আয়োজনের ব্যস্ততা শুরু হয়।
বিশেষ করে বাসা বাড়িতে নানা রকম সুস্বাদু ও মুখরোচক খাবারের ইফতার আইটেম লিস্ট দেখা যায়।
নানান ধরনের ইফতারের পসরা সাজিয়ে দোকানিরা ফুটপাতে, রাস্তার ধারে, অলিতে-গলিতে বসে যায় মানুষের এই প্রবণতাকে কেন্দ্র করে।
সাধারনত বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, ইফতার সামগ্রীর মধ্যে যেগুলো থাকবেই তার মধ্যে রয়েছে খোলা খেজুর, মুড়ি, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনী, আলুর চপ, ডাল বড়া, সবজি বড়া, হালিম, বিভিন্ন ধরণের কাবাব, জিলাপি ইত্যাদি।
আখের গুড়ের শরবত,বিভিন্ন ফল ও ফলের রস, বিভিন্ন রঙ মিশ্রিত বাহারি শরবত দিয়ে ইফতারিতে অনেকে পানীয় হিসেবে রাখেন।
আবার অনেকেই চিকেন ফ্রাই, বারবিকিউ এর পাশাপাশি বিভিন্ন মুখরোচক খাবার-বিরিয়ানি, তেহারি ও ভুনা খিচুড়ি তাদের খাবারের রাখেন।
রোজাদার ইফতারিতে কি ইফতার আইটেম রেসিপি রাখবেন তা তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের উপরে অনেকটা নির্ভর করে।
দোকানের প্রস্তুত ইফতার ও সেহরির খাবার না খেয়ে ঘরের তৈরি খাবার খাওয়া উচিত সকলের।
সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান রোজাদারের জন্য ইফতারে খেজুর বা খুরমা,কচি শশা,ফরমালিন বা ক্যালসিয়াম কার্বাইডমুক্ত সতেজ মৌসুমী ফল, ঘরের তৈরি বিশুদ্ধ শরবত, ভেজানো চিড়া থাকা ভালো।
রমযান মাসে মুসলিমগণ সারাদিন রোযা রাখার পর, সূর্যাস্তের সময় যে সকল খাবার গ্রহণ করেন তাই ইফতার (আরবি: إفطار ইফ্ত্বার্) হিসেবে পরিচিত।
রমজান মাসে সবাই একত্রে বসে ইফতার গ্রহণ করেন, খেজুর খাবার মাধ্যমে ইফতার শুরু করা সুন্নত।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ স্থানে পানি খাবার মাধ্যমে, আবার অনেক স্থানে ভেজা চাল মুখে দেবার মাধ্যমে ইফতারি শুরু করা হয়।
সালমান ইবনে আমির (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ রোজা রাখলে খেজুর দিয়ে যেন ইফতার করে, খেজুর না হলে পানি দিয়ে; নিশ্চয় পানি পবিত্র। (আহমাদ, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ ও দারেমি শরিফ; আলফিয়্যাতুল হাদিস : ৫৬২, পৃষ্ঠা: ১৩১-১৩২)
সারাদিন রোজা রাখার পর প্রথম খাবার হলো ইফতারি। রোজার শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সঠিক ও স্বাস্থ্যকর ইফতারি অনেক জরুরি।
সুষম এবং স্বাস্থ্যকর ইফতারি যথাযথ পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।যেন পরিমাণে সবার জন্য তা উপযোগী হয় ইফতারির মেনু এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে। কারন ছোট, বড় এবং বৃদ্ধ শারীরিক ভাবে অসুস্থ অনেকেই সিয়াম পালন থাকে। তাই সবার জন্য উপযোগী মেনু ইফতারে থাকলে তা অনেক উপকারী হয়।
ইফতার আইটেমে তরল খাবার
আজানের পর যে খাবারটি দিয়ে রোজা ভাঙা হয় সেটি হলো তরল খাবার। আজানের পর পানি মুখে দেয়ার পরে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ড বিরতি দিয়ে তরল খাবারটি খাওয়া হয় ।এ ক্ষেত্রে আস্তে আস্তে তরলটি গ্রহণ করতে হয়। খুব তাড়াহুড়া না করে বা গড় গড় করে না খাওয়াই ভালো।
তরল হিসেবে ডাবের পানি, তাজা ফলের রস, তোকমার শরবত, আখের গুড়ের শরবত, লাচ্ছি, ও লেবু পানি অনেক উপকারি।
শরবত বা তরল তৈরিতে তাল মিছরি, গুড়, মধু ও ব্রাউন সুগার ব্যবহার করা যেতে পারে। ডায়াবেটিসের রোগীরা চিনি না দিয়ে বিকল্প চিনি ব্যবহার করতে পারেন বা ডাবের পানি পান করতে পারেন।
যেকোনো মৌসুমী ফল অবশ্যই ইফতারির মেনুত রাখতে হবে। মিক্স ফ্রুটস বা ফল দিয়ে তৈরি ডেজার্ট খাওয়া যেতে পারে। যা ফলের ভিটামিন এবং মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে থাকে। ফল শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য আঁশ প্রদান করে।
রমযান মাসে শাকসবজি খুব সীমিত খাওয়া হয় য়ার জন্য খাবারের তালিকায় তাজা ফল বেশি বেশি খেতে হবে। এতে আঁশের চাহিদা মেটে, মেলে প্রচুর পটাশিয়াম, খনিজ, ভিটামিন , এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন, শর্করা এবং ক্যালসিয়াম। আবার খেজুরে রয়েছে অনেক ক্যালরিও।
আপনাদের ইফতার প্লেটে কমপক্ষে দুটি খেজুর ফল রাখুন।
খেজুরের উপকারি গুনাগুন জানতে এই ব্লগটি পড়ুন খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন।
আমরা ইফতার এ সবজি হিসাবে শুধু বেগুনি খেয়ে খেয়ে থাকি, আর বেগুনি ছাড়াও বিভিন্ন সবজি দিয়ে আমরা স্বাস্থ্যকর রেসিপি তৈরি করতে পারি যা অনেক উপকারে আসে।
যেমন- সবজি, স্যান্ডউইচ, সবজি রোল, সবজি মম, সবজি নুডলস, সবজি পাকোরা ইত্যাদি।
বয়স্কদের সবজি স্যুপ দিলে ভালো হয়। তবে মনে রাখতে হবে সবজি দিয়ে প্রস্তুত রেসিপিতে যেন অনেক কম তেলের ব্যবহার করা হয়।
ছোলা বুট সবার অনেক প্রিয় খাবার এবং রমযান ইফতারের প্রধান খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন। তবে আমরা অনেক তেল এবং বেশি মসলায় ভুনা খেয়ে থাকি, যার ফলে উপকারের থেকে অপকার বেশি হয়।
এটি সারারাত ভিজিয়ে রাখলে ভালো এবং সিদ্ধ ছোলার সাথে পেঁয়াজ, মরিচ, শশা, টমেটো ইত্যাদি মিশিয়ে অথবা সামান্য তেলে খাবার করে খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। কাঁচা ছোলা খেলেও অনেক খাদ্য আঁশ ও প্রোটিন পাওয়া যায়।
শুধু জিলাপি বা বুন্দিয়া নয়, ইফতারে স্বাস্থ্যকর মিষ্টান্ন পরিমিত পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। জিলাপি বা বুন্দিয়া তেলে ভেজে সিরায় ফেলা হয় যা বেশি খেলে ক্ষতিকর।
তাই দুধের তৈরি মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন কার্স্টাড, ফালুদা,ফিরনি, পুডিং ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
ইফতারের জন্য খাবার তালিকায় দই চিড়া রাখতে পারেন ,যার মধ্যে প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও কার্ববোহাইড্রেট পাওয়া যায়।
এছাড়া দই বড়া, নুডলস, স্যান্ডউইচ, রুটি-কাবাব,মম ইত্যাদি ইফতারের ম্যানুতে রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া শশা থাকলে ভালো।
মনে রাখবেন, ঘরে তৈরি খাবার ইফতারকে অনেক স্বাস্থ্যকর করে তোলে। ভাজা-পোড়া ও বাইরের খাবার তাই অবশ্যই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন।
একটি স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার প্লেট এর নমুনা দেখুন এই ভিডিওতে
এক গ্লাস শরবত বা ডাবের পানি। হালকা তেলে ভাজা বা সেদ্ধ বা কাঁচা ছোলা আধা কাপ, মুড়ি মাখানো হলে পৌনে এক কাপ, দুটি খেজুর, পেঁয়াজি/আলুর চপ/পাকোড়া/কাবাব—যেকোনো দুটি আইটেম থেকে দুটি করে।
যেদিন হালিম থাকবে সেদিন বেসন বা ডালের তৈরি খাবার বাদ দিন। ফল নিন ইচ্ছামতো (মাল্টা, পেয়ারা, চাঁপা কলা, তরমুজ, বাঙ্গি,আনারস)। শসার রায়তা/টকদই দুই চা-চামচ থাকতে পারে।
সারাদিন না খেয়ে থাকায় দিন শেষে রক্তে গ্লুকোজ কমে যায়। আর গ্লুকোজ হল মস্তিষ্কের খাদ্য। এ কারণে ইফতারে এমন আইটেম থাকা উচিৎ যা দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ করতে পারে।
রমজানে ঠিকঠাক ভাবে সব রোজা রাখার জন্য প্রয়োজন সুস্থ থাকা। আর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ইফতার আইটেম এ মেনে চলুন উপরে উল্লেখিত টিপসগুলো।
আসসালামুয়ালাইকুম। Blog Academy এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আশা করি আপনি ভালো আছেন। আমাদের আজকের আলোচনার…
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস গুলি হল প্ল্যাটফর্ম যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের সেবা প্রস্তাব করতে পারে এবং ক্লায়েন্টরা তাদের…
ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রিল্যান্সারদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সঠিক কৌশল অবলম্বন করে ক্লায়েন্টের সাথে ভালো…
প্রেরণাদায়ক সাফল্যের গল্প ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি শক্তিশালী উৎস হতে পারে। যেভাবে অনেক মানুষ তাদের পেশাগত…
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট টিপস—আপনার সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে আরও বেশি কাজ করুন এবং জীবন…
ফ্রিল্যান্সারদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের কাজ প্রচার, নতুন ক্লায়েন্ট আকর্ষণ…
This website uses cookies.