খেজুরের উপকারিতা ও গুণাগুণ

খেজুরের উপকারিতা ও গুণাগুণ

আসলামুআলাইকুম, Blog Academy  স্বাগতম। অনেক গুণাগুণ সমৃদ্ধ সুমিষ্ট একটি জনপ্রিয়  ফল হচ্ছে খেজুর। অন্য সকল ফলের তুলনায় খেজুরের উপকারিতা গুণাগুণ যথেষ্ট রয়েছে। অতি প্রাচীন কাল থেকেই খেজুর অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়, খেজুরের উপকারিতা ও বিভিন্ন গুন সম্পর্কে।

খেজুরের উপকারিতা

প্রায় সকল মানুষের কাছে খেজুর অনেক পছন্দ  কারণ খেজুর অনেক সুস্থাদু এবং পুষ্টিগুন সম্পূর্ণ একটি  ফল,যার রয়েছে শরীরের জন্য আশ্চর্যজনক উপকারিতা। তবে আমরা সেই কার্যকরী উপকার থেকে বঞ্চিত হই,কারণ হচ্ছে নিয়মিত খেজুর না খাওয়া,অর্থাত্‍ সর্বোপরি অধিকাংশ মানুষ রমজান মাস আসলেই খেজুর খেয়ে থাকে শুধু।

তাই  বলা যায় প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে ৪/৫ টা ভালো মানের পরিষ্কার খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করলে যথেষ্ট উপকার পাওয়া যাবে। শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং উপযুক্ত রাখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে খেজুর। আজকে তাই আমরা বিস্তারিত ভাবে জানবো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে যা আপনার শরীর উপযুক্ত ও রোগ মুক্ত রাখতে মুখ্য ভূমিকা রাখবে।

খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন
খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন

খেজুরঃ

এক ধরনের তালজাতীয় শাখাবিহীন বৃক্ষ হল খেজুর  ( Date Palm )। ফিনিক্স ড্যাকটিলিফেরা (Phoenix dactylifera) এর বৈজ্ঞানিক নাম। মানুষের কাছে  সুমিষ্ট ফল হিসেবে খেজুর পরিচিতি পাওয়ার  অনেক বছর আগে থেকেই এর চাষাবাদ হয়ে আসছে।এ গাছটির জন্ম উৎপত্তি  মূলত মরু এলাকায়। খেজুর গাছের ফলকে খেজুররূপে আখ্যায়িত করা হয়।

ভিডিওতে দেখতে পাবেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় খেজুর বাগান

বিভিন্ন ধরনের খেজুর – খেজুরের প্রকারভেদ

আমরা সাধারণত দু’ধরনের খেজুরের কথা জানি – রসালো নরম খেজুর এবং  শুকনো খেজুর। বিভিন্ন প্রকার খেজুরের বিভিন্ন উপকারিতা রয়েছে। তবে এই সকল খেজুর ছাড়াও নানা প্রকারের খেজুর পাওয়া যায়, যেমন- 

  • মেজুলঃ বড় বড় সুস্বাদু এই খেজুরগুলো মরোক্কোতে উৎপন্ন হয়। খেতে অনেকটা টফির মতো।
  •  বারহিঃ ইরাকে উৎপন্ন হয় এই খেজুরের প্রজাতিটি। অনেকে একে হলুদ খেজুরও বলেন। এই ফলগুলো নরম আর বেশ শাঁসালো হয়।
  • দিয়েরিঃ এই খেজুরগুলো আবার লম্বাটে, সরু সরু আর কালচে রঙের হয়।
  • হ্যালোয়িঃ ছোট্ট ছোট্ট দেখতে আর খেতেও খুব মিষ্টি হয় এই খেজুরগুলো।
  • দিগেত নুরঃ খেজুরের প্রজাতিগুলির মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রজাতি বলা হয় দিগেত নুর-কে। আলজেরিয়ায় উৎপন্ন হয় এই ফলগুলি,খুব একটা রসালোও না আবার খুব একটা শুকনোও না; খুব বেশি মিষ্টি হয়না এই খেজুরগুলো।
  • হায়ানিঃ এগুলি মিশরের খেজুর  নামে পরিচিত। এই খেজুরগুলি কালচে লাল এবং নরম হয়। এই খেজুরগুলিই আমাদের দেশে বেশি পাওয়া যায়।
  • মিগ্রাফঃ ইয়েমিনের দক্ষিণভাগে উৎপন্ন হয় এই খেজুর, এই খেজুরগুলিও বেশ বড় হয় এবং রঙের দিক থেকে একটু সোনালি ও কমলার মিশেল হয়।
  •  ইতেমাঃ এই খেজুরগুলি আলজেরিয়াতে  উৎপন্ন হয় এবং খেতে খুব মিষ্টি। এগুলি অন্যান্য খেজুরের তুলনায় আকারে বড় এবং একটু ডিম্বাকৃতি হয়।
খেজুরের প্রকারভেদ
খেজুরের প্রকারভেদঃ

এই এত্তগুলো প্রজাতির মধ্যে অবশ্য মেজুল প্রজাতির খেজুরই খুব জনপ্রিয়। শুধুই যে সুস্বাদু তা নয়, এতে নানা পুষ্টিগুণও রয়েছে।মেজুল ফাইবার, পটাশিয়াম এবং প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ।

খেজুরের পুষ্টি উপাদানঃ

আমরা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে রোজায় ইফতারে প্রত্যেকেই কম বেশি খেজুরকে খাবারের তালিকায় প্রথম পছন্দ রাখি। তবে শুধু রোজা নয়, চাইলে পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফলটি সারা বছরই খাওয়া যায়।

অনেকেরই হয়তো অজানা এ খেজুরে আছে নানা ধরনের ঔষধি গুণ। পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খেজুরে রয়েছে ভিটামিন, আঁশ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিঙ্ক।

পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরের প্রয়োজনীয় আয়রনের অনেকটাই খেজুর থেকে আসে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস থাকলে প্রচলিত খেজুরের বদলে শুকনো খেজুরকে ডায়েটে রাখতে বলেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ছাড়াও সুস্বাদু ও শক্তির অন্যতম উৎস এ ফলটি হলো ফ্রুকটোজ ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়।খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। 

  • খেজুরের পুষ্টি উপাদান হিসেবে পাওয়া যায় ৩০ গ্রাম পরিমাণ বা ৪ টি খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মিলি গ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান।
  • আর খেজুরে আছে প্রচুর ভিটামিন বি, যা ভিটামিন বিসিক্স মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। আর এতে ফাইবার থাকায় ডায়েটেও রাখা পারে নিশ্চিন্তে।
  • প্রতিটি খেজুরে রয়েছে ২০ থেকে ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • এদিকে রক্তস্বল্পতায় ভোগা রোগীরা প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন। একজন সুস্থ মানুষের শরীরে যতটুকু আয়রন প্রয়োজন, তার প্রায় ১১ ভাগ পূরণ করে খেজুর। 
  • এ ছাড়া দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা রাতে পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে সে পানি পান করলে । খেজুরে থাকা নানা খনিজ হৃদস্পন্দনের হার ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
  • খেজুর  রেটিনা ভালো রাখে কারন খেজুরে লিউটেন ও জিক্সাথিন রয়েছে।
খেজুরের পুষ্টি উপাদান
খেজুরের পুষ্টি উপাদান

খেজুরের উপকারিতা গুলো নিম্নরূপঃ  

  • শরীরে শক্তি যোগায়।
  • দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে।
  • ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
  • ত্বক ভালো ও সুন্দর রাখে।
  • হাড় সুস্থ ও মজবুত রাখে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
  • গ্লুকোজের অভাব দূর করে।
  • ওজন বাড়াতে সহায়তা করে।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

১। খেজুর শরীরে শক্তি যোগায়

খেজুর শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করার মাধ্যমে আমাদের শরীরের ভারসাম্য প্রদান করে এটি খেজুরের একটি প্রধান  উপকারি গুণাগুণ। দৈনিক নিয়ম করে ৪/৫ টি করে খেজুর খাওয়ার অভ্যাস করতে পারলে, শরীরের শক্তি দ্রুত বাড়তে শুরু করবে।এবং আপনার শারীরিক দুর্বলতা হ্রাস পেতে শুরু করবে।

আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকি, যার ফলে অনেক শক্তি ব্যয় হয়ে থাকে।তার জন্য আমাদের শরীরের জন্য শক্তি যোগায় এমন সব খাবার খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য অন্য সব খাবারের মধ্যে খেজুর হচ্ছে অন্যতম।

কারণ এটিতে প্রচুর পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন,ক্যালসিয়াম,ফসফরাস,লোহা, শর্করা, ফাইবার, স্নেহ পদার্থ,প্রোটিন,পটাশিয়াম সহ আরও অনেক কার্যকারী উপাদান রয়েছে। 

অর্থাত্‍ খেজুরে ক্যালরি রয়েছে পর্যাপ্ত, যার ফলে শরীরে যতেষ্ট শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এটিতে রয়েছে এমন সব উপাদান যা তাত্‍ক্ষণিক শক্তি ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।

২। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে খেজুর

চোখের জ্যোতি বা দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করতে খেজুরের উপকারিতা অনন্য ভূমিকা রাখে। আমাদের অনেকেরই চোখে নানান সমস্যা হওয়ার কারণে দৃষ্টিশক্তি লোপ পেয়ে থাকে, এটি বাড়াতে খেজুর যতেষ্ট অবদান রাখে।

অর্থাত্‍ প্রতিদিন খেজুর খেতে পারলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পেতে থাকবে। কারণ খেজুরের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এ, জিয়াজেন্থিন ও লিউটিন সহ আরও কিছু কার্যকারী উপাদান যা ম্যাকুলার ও রেটিনার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে ভূমিকা রাখে। 

নিয়মিত  খেজুর খেতে পারলে এই ফলটি চোখের জ্যোতি বা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এবং খেজুরে রয়েছে ভিটামিন এ যা রাতকানা রোগ  প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৩। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে খেজুরের উপকারিতা

বর্তমানে অনেক মানুষ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। যা শরীর স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সরূপ। আর তার জন্য আমরা অনেক টাকা নষ্ট করে ফেলছি। কিন্ত আপনি ইচ্ছা করলে কিছু প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারেন। 

এছাড়াও খেজুরও ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে বিশেষ করে মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধেও এটি সহায়ক।তাই নিয়মিত খেজুর খান নিজেকে বিভিন্ন ক্যান্সার থেকে বাঁচিয়ে রাখুন।

৪। খেজুর ত্বক ভালো ও সুন্দর রাখে

খেজুরের উপকারিতা অনন্য ত্বক সুস্থ, সুন্দর, উজ্জ্বল ও কোমল রাখতেও । দৈনিক  সকালে খালী পেটে ৪/৫ টা খেজুর খাওয়র ফলে ত্বক সুস্থ, সুন্দর রাখা সম্ভব। কারণ খেজুর একটি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার। 

এটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন,প্রোটিন,ক্যালসিয়ামসহ আরও আশ্চর্যজনক ও কার্যকারী উপাদান।যা বিভিন্ন সমস্যা দূর করার পাশাপাশি ত্বক সুন্দর ও ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং যতেষ্ট উজ্জ্বল করে তুলে।

তাই ত্বকের সুস্থতা ও উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য অন্যান্য খাবারের সাথে অবশ্যই খেজুর খেতে পারেন।

৫। হাড় সুস্থ ও মজবুত রাখতে খেজুরের পুষ্টিগুন

নিয়মিত খেজুর খেলে হাড় সুস্থ ও মজবুত থাকে, এবং হাড়ের দুর্বলতা চলে যায়। আমরা অনেকেই হাড়ের দুর্বলতা অনুভব করি।বিভিন্ন কারণে অনেকের হাড় অসুস্থ হয়ে যায় এবং কারও হাড় খুব নরম হয়ে থাকে। 

যার জন্য মাঝে মাঝে  নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যেমন- হাঁটা হাঁটি করা যায় না, রীতি মতো চলাফেরা করা না এবং ব্যায়াম করতে ও সমস্যা হয়ে থাকে। তার জন্য অবশ্যই মানসম্মত খেজুর ধুয়ে পরিষ্কার করে প্রতিদিন খাওয়া উচিত। 

হাড় সুস্থ ও মজবুত রাখতে ও খেজুরের উপকারিতা অতুলনীয়। এটিতে ভিটামিন,প্রোটিন, ক্যালসিয়াম,সেলেনিয়াম,ম্যাঙ্গানিজ ও ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।

এই সকল মিনারেল বা খনিজ পদার্থ হাড়ের সুস্থতার জন্য অতুলনীয় ভূমিকা রাখে। তাই ছোট-বড় সবার অবশ্যই  নিয়মিত খেজুর খাওয়া প্রয়োজন।

৬। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে ভালো মানের খেজুর

সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করতে চান? তাহলে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ৪/৫ টি ভালোমানের খেজুর খান।খেজুরে থাকা বিভিন্ন কার্যকারী উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারে।

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন অথবা রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পানি খেতে পারেন। যার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া সম্ভবনা কমে যাবে।

৭। গ্লুকোজের অভাব দূর করে

অবশ্যই আমাদের খেয়াল রাখা উচিত  আমাদের শরীরে যেন গ্লুকোজের ঘাটতি না হয়। গ্লুকোজের ঘাটতি  হলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে । 

তাই গ্লুকোজ রয়েছে প্রচুর পরিমাণ  এমন খাবার খাওয়া দরকার সকলের, খেজুরে যেহেতু গ্লুকোজ পর্যাপ্ত পরিমান পাওয়া যায় তাই এর মাধ্যমে আমরা গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণ করে নিতে পারি।

শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয় রোজায় দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে। তাই এ সময়,আমারা খাদ্য তালিকায় নিয়মিত খেজুর রাখতে পারি।আর খেজুর খাওয়ার পরে সে অভাব দূর হয়। গ্লুকোজের ঘাটতি দূর করার জন্য নিয়মিত ৪/৫ টা খেজুর ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে খাওয়া উচিত।

৮। ওজন বাড়াতে সহায়তা করে

ওজন বাড়াতে চান? তাহলে নিয়মিত ৪/৫ টা করে খেজুর খান, ১/২ মাস পর দেখবেন আপনার ওজন যতেষ্ট বেড়ে যাবে। যারা চিকন বা যাদের ওজন মাত্রাতিরিক্ত হারে কমে যেতে শুরু করেছে তারা তো অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন।

অনেক সময় আমরা বেশির ভাগ মানুষ  যেমন শরীরের ওজন  কমানোর জন্য নানান পদ্ধতি অবলম্বন করি,ঠিক তেমন ভাবে  কিছু মানুষ আছে যারা তাদের  ওজন বাড়ানোর জন্য অনেক উপায় খোঁজ করতে থাকেন।

শরীর স্বাস্থ্য মোটা করার জন্য অনেক চেষ্টা করে থাকে, তাদের জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া যেগুলো খেলে ওজন বাড়তে থাকে। আর শরীরের ওজন বৃদ্ধি করে এমন খাবারের মাঝে খেজুর ফল অন্যতম।

অর্থাত্‍ খেজুর ফলে ক্যালরি পরিমান অনেক বেশি রয়েছে যা শরীরে ভাঙন রোধ করে ওজন দ্রুত বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।

৯। খেজুর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে

বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপ একটি জটিল সমস্যা,আর এই সমস্যা  নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে খেজুর।মাঝে মাঝে আমাদের প্রায় অনেক সময়ই  উচ্চ রক্তচাপ সমস্যা দেখা দেয়।তার জন্য আমরা ডাক্তারের কাছে ছুটাছুটি করি, আরও কত কী?

কিন্ত কিছু প্রাকৃতিক খাবারের ফলেই উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমানো যায় আপনি জানেন। আর সেগুলোর মধ্যে খেজুর সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে। অর্থাত্‍ খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম  এবং ম্যাগনেসিয়াম যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

তাই যাদের এই সমস্যা আছে প্রতিদিন ৪/৫ টি করে খেজুর খেতে দিন, যতেষ্ট উপকার পাবেন। তাছাড়া শরীর স্বাস্থ্য ও ভালো থাকবে।

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে খেজুর যেমন উপকারী তেমনি কাজুবাদামের ও উপকারিতা রয়েছে যথেষ্ট।

১০। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে খেজুর অনেক উপকারি

খেজুর বিভিন্ন ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। যেমন হার্ট সুস্থ রাখতে ভুমিকা রাখে, ডায়াটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ  হওয়ার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে ‘এল ডি এল’ বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে।

ফলে হার্টের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় এবং সুস্থ ও ভালো থাকে। এছাড়া মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে, হজমশক্তি বর্ধক, যকৃত্‍ ও পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক করে, অ্যানিমিয়ার মতো রোগকে দূরে রাখে, অ্যালার্জির প্রকোপ কমাতে সাহায্য করে ।

একাধিক রোগকে দূরে রাখার পাশাপাশি শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে খেজুরে থাকা প্রাকৃতির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট । 

প্রতিদিন কত খেজুর খেতে হবে?

খেজুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে আছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, এবং প্রোটিন। তাই প্রতিদিন খেজুর খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

কত খেজুর খাবেন?

  • সাধারণ মানুষের জন্য: প্রতিদিন ২-৩ টি খেজুর খাওয়া যথেষ্ট।
  • গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য: প্রতিদিন ৪-৫ টি খেজুর খাওয়া যেতে পারে।
  • খেলাধুলা ও শারীরিক পরিশ্রমীদের জন্য: প্রতিদিন ৫-৬ টি খেজুর খাওয়া যেতে পারে।

কখন খাবেন?

  • সকালের নাস্তার সাথে: খেজুর দিয়ে দিন শুরু করলে শরীরে দীর্ঘ সময় শক্তির সরবরাহ হবে।
  • বিকেলের নাস্তায়: বিকেলে ক্ষুধা মেটাতে খেজুর খেতে পারেন।
  • কাজের ফাঁকে: কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে খেজুর খেতে পারেন।
  • ব্যায়ামের পর: ব্যায়ামের পর শরীরে হারানো শক্তি পুনরুদ্ধার করতে খেজুর খেতে পারেন।

উপসংহার :

এই ব্লগ পোস্টে খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুন, খেজুরের প্রকারভেদ নিয়ে যথাযথ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি আমাদের এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগেছে। 

আমাদের এই পোস্টটি পড়ে যদি আপনারা সামান্য পরিমানও উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাদের সকল প্রিয়জন, যাদের জন্য খেজুরের উপকারী বিষয়গুলো জানলে তারা সকলে উপকৃত হবেন তাদের কাছে শেয়ার করবেন। যদি খেজুরের উপকারিতা  নিয়ে আপনাদের  মূল্যবান কোন পরামর্শ থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *