আসসালামু আলাইকুম, Blogacademy এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। গত পর্বে আমরা মানব দেহে খাদ্যের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করেছিলাম। আজকে আমরা জানবো সুস্থ জীবনের জন্য যেসব খাদ্য গ্রহন করা উচিত এবং যে সব কাজ না করলেই নয়।
যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে যা জানতে হবে(If you want to stay healthy then you need to know):
জীবনকে সুস্থ সুন্দর রাখতে কিছু নিয়ম অনুসরন করে চলতে পারি। আজকাল মানুষ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শুধুমাত্র অস্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন অতিবাহিত করার কারনে। সেই রোগ থেকে মুক্তি লাভের আসায় আমরা হাজার হাজার টাকা খরচ করে ডাক্তারের সরনা পন্ন হই।
পাশাপাশি নানা রকম ওষুধে অভ্যস্ত হয়ে পরি। আর একবার অসুস্থ হলে আমাদের স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হয়। একটা বিষয় আমাদের সব সময় মনে রাখা উচিত যে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং বাজে খাদ্যাভাবের কারনে আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়।
এসব অসচেতনতা, অবহেলা ও ছোটখাটো ভুলের জন্য আমরা অনেক সময় বড় ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ি। তাই খাওয়ার আগে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে, পচা, বাসি ও অস্বাস্থ্যকর খাবার একেবারে বর্জন করতে হবে। যতটা পারা যায় ঘরের বাইরের খাবার না খাওয়াই উত্তম। আর বাইরের খাবার যদি খেতেই হয় তবে খাবারের মান যাচাই করে মান সম্পন্ন প্যাকিং খাবারের অভ্যাস করে তুলি। সঠিক ভাবে নিয়ম মত চলি এবং স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করে সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করি।
সু্স্থ জীবন যাপনের জন্য সুষম খাদ্য(A balanced diet for living a healthy life):
সু্স্থ জীবন যাপনের জন্য সুষম খাদ্যের অভ্যাস আর নিয়ম মেনে চললেই হয়। কোনো খাবারই খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয় আবার খুব কম খাওয়াও ভালো নয়। তাই পরিমিত খাদ্যের অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী । আমরা অনেকে আছি যারা ভাজা-পোড়া এবং চর্বি জাতীয় খাবার খুব বেশি পছন্দ করি। আর এসব খাবার খেতে টেস্টটি হলেও মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য উপযুক্ত নয়। ফলমূল ও শাকসবজি স্বাস্থ্যের জন্য সব থেকে ভালো খাবার।
যেসব খাবার মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর(Foods that are harmful to the human body):
সাধারনত আমরা ঘরের বাহিরে যেসব খাবার খেয়ে থাকি, তা খেতে সুস্বাদু হলেও মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত হয় না। ক্যান্সার,ডায়াবেটিস,স্ট্রোক,হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ জাতীয় প্রাণঘাতী রোগ থেকে বাঁচতে ঘি, মাখন, ডালডা, চর্বি বা প্রচুর তেলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া পরিমিত করতে হবে। যেমনঃ উদাহরণ স্বরূপঃ জাঙ্কফুড, কোমল পানীয় ইত্যাদি।
যেসব খাবার মানুষের শরীরের জন্য নিরাপদ(Foods that are safe soft drinks for the human body):
আমরা যে সকল খাদ্য গ্রহন করি তা হতে হবে কম ক্যালরিযুক্ত ও বেশি পুষ্টিমান সম্পন্ন। জৈব খাবার আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী। জৈব খাবার বলতে বোঝায়, যে সকল খাবার কীটনাশক ও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ছাড়াই উৎপাদন করা হয়। আমরা যা খাবার খাই তা কম করে হলেও অর্ধেক হতে হবে জৈব খাবার । যেমনঃ শাকসবজি ও ফলমূল । অন্যান্য যে সকল খাদ্য খাই তার মধ্যে থাকতে হবে অর্গানিক ভুসিসমৃদ্ধ খাদ্য শস্য, বাদাম, তেল বীজ জাতীয় খাদ্য।
সবচেয়ে ভালো তেল হলো তিসি তেল, জলপাই থেকে প্রাপ্ত তেল, যাকে আমরা অলিভ অয়েল বলে থাকি। তবে সয়াবিন তেলই আমরা বেশি খেয়ে থাকি অন্যান্য তেলের দাম বেশি বলে। অতিরিক্ত শর্করা, চিনিজাতীয় খাবার, ময়দা, কেক, কুকিজ, পিৎজা ও পেস্ট্রি খাবারের পরিমান একবারে কমিয়ে দিয়ে অঙ্কুরিত ও আটা জাতীয়খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা আবশ্যিক ।
খাসি ও গরুর মাংস পরিমিত খেতে হবে। প্রোটিন হিসেবে মাছ ও মুরগির মাংস শরীরের জন্য ভাল। আমারা যারা কাঁচা লবণ খাই, কাঁচা লবণ খাওয়া ছেড়ে দেওয়া দরকার। শরীরের জন্য অর্গানিক ডিম, দুধ ও দই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। ভিটামিন-সি, বিটা ক্যারোটিন, ও ভিটামিন-ই, শরীরের জন্য বিশেষ উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
সব অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের প্রধান উৎস ফলমূল, শাকসবজি ও সবুজ চা জাতীয় খাবার । মনে রাখতে হবে ,ওষুধ কম্পানি হতে প্রস্তুতকৃত ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের চেয়ে প্রকৃতি হতে পাওয়া ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট খুব বেশি কার্যকর ও সহজলভ্য।
সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাসঃ
সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস রাখা জরুরি। আমাদের শরীর শুধু রক্ত-মাংসে গড়া কোনো বস্তু নয়। আমাদের শরীরের জন্য অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো আমাদের মন বা আত্মা। আর আমাদের আবেগ-অনুভূতি আমাদের শরীরের ওপর ভীষণ প্রভাব ফেলে। বাস্তব জীবনে , ক্রোধ, লোভ, মোহ, ঈর্ষা ও প্রতিহিংসা আমাদের দুঃখ, কষ্ট, অশান্তি, অসুস্থতার কারন। তাই এসব থেকে দুরে থেকে নিয়মিত সঠিক খাবার গ্রহন করে নিজের সুস্থ্যতা নিশ্চিত করি। সৃষ্টিকর্তা সবাইকে সুস্থ জীবন দান করুন- এই কামনা করি।
সুস্থ জীবনের জন্য যেসব খাদ্য গ্রহন করা উচিত এই সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, আমাদেরকে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমাদের পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য।