আসলামুআলাইকুম, Blog Academy তে স্বাগতম,আজকে আমরা আলোচনা করবো ইন্টারনেটের জনক কে এই বিষয়ে। বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট আমাদের জীবনকে অনেক বেশি সহজ করে তুলেছে। এটা ব্যবহার করে না এমন মানুষ পাওয়া যায় না আজকাল।
ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে সারা বিশ্বের ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং প্রজন্মের মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেটে অসামান্য অবদানের কারণে আজ গোটা পৃথিবী একটি পরিবারের মত হয়েছে। কিন্তু আমরা কি জানি, এই ইন্টারনেটের কার মাধ্যমে এসেছে বা ইন্টারনেটের জনক কে ? যদি জানা না থাকে তাহলে চলুন জেনে আসি সে সম্পর্কে।
প্রকৃতপক্ষে ইন্টারনেটের জনক কে ?
ইন্টারনেট একক ভাবে কোন একজন ব্যক্তির দ্বারা আবিষ্কৃত হয়নি। এটি আবিষ্কারের পেছনে অনেক ব্যক্তির কৃতিত্ব রয়েছে তবে ইন্টারনেটে মূল বিষয়গুলো আবিষ্কারের ক্ষেত্রে জি কার্ফ এবং রবার্ট কানের অবদান অনেক বেশি। তাই তাদের কে ইন্টারনেটের জনক বলে বিবেচনা করা হয়।
ইন্টারনেট ব্যবহারের আমাদের নিত্যদিনের জীবনকে সহজ সরল করে তুলেছে। আগে যে কাজ করতে আমাদের অনেক বেশি সময় লাগতো। সেই কাজগুলো অতি দ্রুততার সাথে ইন্টারনেটের সাহায্যে আমরা খুব সহজে করে ফেলছি।
তবে ইন্টারনেট যিনি আবিস্কার করেছেন বা যাকে আমরা আধুনিক ইন্টারনেটের জনক বলে থাকি। তিনি আর কেউ নন তিনি হলেন ভিনটন জি কার্ফ। তার এই উপাধিটি তিনি আমেরিকান কম্পিউটার বিজ্ঞানী রবার্ট কানের সাথে ভাগাভাগি করেছেন। পরবর্তীতে এই ইন্টারনেট কে একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট (WWW) সাথে যুক্ত করে এটিকে Live করেন টিম বার্নার্স লি। যেটি ইন্টারনেট এর সর্বপ্রথম ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিত হয়েছে।
ইন্টারনেটের জনক ভিনটন জি কার্ফ সম্পর্কে বিস্তারিত
ইন্টারনেটের জনক কে এই প্রশ্ন ভাবতে গেলে ভিনটন জি কার্ফ এর নাম চলে আসে। আধুনিক ইন্টারনেটের জনক হিসেবে পরিচিত এই ব্যাক্তি জি কার্ফ নামে পরিচিত। তিনি TCP/IP প্রোটোকল এবং ইন্টারনেটের প্রাথমিক স্থাপত্যের সহ-ডিজাইন করতে সাহায্য করেছিলেন ।
কার্ফ মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অফ ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি (DARPA) এ তার কর্মজীবন শুরু করেন যা ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেট-সম্পর্কিত ডেটা প্যাকেট এবং নিরাপত্তা প্রযুক্তি তৈরিতে সহায়ক ছিল।
তিনি ২০০৫ সাল থেকে Google এর সাথে যুক্ত রয়েছেন। যেখানে তিনি উন্নত ইন্টারনেট-ভিত্তিক পণ্য এবং পরিষেবা বা সার্ভিস গুলো তৈরি করতে নতুন সক্ষম প্রযুক্তি শনাক্ত করতে সহায়তা করেছেন ৷ তিনি ইউএস ন্যাশনাল মেডেল অফ টেকনোলজি (১৯৯৭ সালে) এবং সেইসাথে এসিএম অ্যালান এম টুরিং পুরস্কার পেয়েছিলেন।
যাকে কম্পিউটার বিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার হিসাবেও উল্লেখ করা হয়। তিনি প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ কর্তৃক প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম পুরস্কার পেয়েছেন।
টিম বার্নার্স-লি কে?
আজ, যখন আমরা ইন্টারনেটের জনক সম্পর্কে চিন্তা করি। বেশিরভাগ মানুষ টিম বার্নার্স লি সম্পর্কে ভাবেন, যিনি ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব তৈরি করেছিলেন। আসলে আধুনিক ইন্টারনেটের জনক, ভিনটন জি কার্ফ যেই পথ তৈরি করেছিলেন। সেটি টিম বার্নার্স লি পরবর্তীতে ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব’ তৈরি করে ইন্টারনেটের জাগরণ তৈরি করেছিলেন।
জি কার্ফ এবং টিম বার্নার্স-লি উভয়েরই ইন্টারনেট কেমন হওয়া উচিত সে সম্পর্কে কিছুটা ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছেন। টিম বার্নার্স-লির অভিমত যে, আমাদের অবশ্যই ফেসবুক, গুগলের মতো প্রযুক্তিগত মোগলদের থেকে ইন্টারনেটের বিকেন্দ্রীকরণের দিকে নজর দিতে হবে। এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা বাড়ানোর মাধ্যমে ডেটা কীভাবে ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় তার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা।
বার্নার্স-লি অজস্র সম্মান পেয়েছেন ইন্টারনেটের জাগরণ তৈরি করার জন্য। বার্নার্স-লি ইংল্যান্ডের রানীর কাছে পেয়েছেন নাইটহুড, স্যার খেতাব। পেয়েছেন কম্পিউটার বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ পুরস্কার টুরিং এওয়ার্ড। কিন্তু টিম ভাবেন, এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন যে বিশ্বের কয়েক শ কোটি মানুষের একসাথে যোগাযোগ করতে পারাটাই তার সর্বোচ্চ প্রাপ্তি। টিম বার্নার্স-লি তাই আজও কাজ করে চলেছেন, নীরবে নিভৃতেই।
ইন্টারনেট এর জনক সম্পর্কে শেষ কথা
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট এর অবদান অপরিসীম । ইন্টারনেট ছাড়া কোন কিছু কল্পনা করা যায় না। তাই ইন্টারনেট সম্পর্কে আমাদের যথার্থ জ্ঞান থাকা জরুরি। এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা ইন্টারনেটের জনক সম্পর্কে যথাযথ ভাবে জানাবার চেষ্টা করলাম।