আসলামুআলাইকুম, Blog Academy তে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য কিংবা বিদায়ী বক্তব্য সাধারণত বছরে দুই একবার হয় তাই, এ বিষয়টি আমাদের সবসময় আয়ত্বে থাকে না।
সেই কথা চিন্তা করে, আমরা খুব সহজ ভাষায় আমাদের আজকের আলোচনায় বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য সম্পর্কে আলোচনা করব। বিদায় অনুষ্ঠানের বিদায়ী বক্তব্য এর খুটি নাটি উদাহরন সহ বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। আর হ্যা লেখার শেষে একটি ভিডিও উদাহরণ হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে যা আপনাকে বেশ ভালো অনুপ্রেরণা দিবে, ইনশাল্লাহ।
বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য এর ভুমিকা কি?
একটি সুন্দর বিদায় অনুষ্ঠানের বিদায়ী বক্তব্য অনুষ্ঠান কে সকলের কাছে স্মরণীয় করে রাখে। বিদায়ী বক্তব্য সুন্দর করে সাজিয়ে লিখে তা প্রদান করা একটি জটিল কাজ মনে হলেও যদি আপনার পরিপূর্ন প্রস্তুতি থাকে তাহলে কঠিন কিছু নয়।
আপনি এই ব্লগটি পড়লে খুব সহজে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য সুন্দর সাবলীল ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারবেন। এবং খুব সহজে সেটা অন্যের সামনে উপস্থাপন করতে পারবেন, ইনশাল্লাহ।
আমরা এখানে বিদায়ী বক্তব্য কিভাবে সাজিয়ে লিখে উপস্থাপন করতে হবে তা বিভিন্ন ধাপে সাজিয়ে আলোচনা করেছি।
১ম অংশ: বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য কী বলবেন তা ঠিক করুন
- আপনার বক্তব্য শুরু কি ভাবে করবেন তা স্থির করুন। আপনি যে সংস্থা, সংগঠন, স্কুল, কলেজ, বা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন সেখান থেকে আপনি যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন তা মনে রাখবেন।
- আপনার সাথে ঘটে যাওয়া সকল কিছুর বিষয়ে চিন্তা করুন এবং এর মধ্যে থেকে একটি গল্প নির্বাচন করুন যা অন্যের কাছে ও ভালো লাগবে।
- ইন্টারেস্টিং এবং আসল পয়েন্ট গুলো নোট করুন।
- এ সময়ে উপস্থাপনের কিছু কৌশল জেনে নিন এখান থেকে।
- বিষয়গুলো নোট করুন, মজার কিংবা হৃদয় বিদারক ঘটনা বর্ননা করুন।
- একটি গুরুত্বপূর্ণ বা সমসাময়িক বিষয় তুলে ধরুন।
- বিদায়ী অনুষ্ঠানের বক্তব্যে হাসিখুশি ভাবে শুরু হওয়া উচিত।
- আপনার জায়গাটি ছেড়ে যেতে কেন খারাপ লাগবে তা আসলেই মন থেকে ভেবে দেখুন।
- অন্যদের সৌভাগ্যের জন্য শুভেচ্ছা কামনা করুন। সত্যি কথা বলুন এবং দু’টো রসিকতা করতে পারেন, যতক্ষণ না তারা এটা খারাপ ভাবে গ্রহন না করে।
- আপনি নিজের জন্য যা আশা করেন তাও বলে দিন, এটা একটা চমতকার ব্যাপার।
২য় অংশ: বিদায় অনুষ্ঠানের বিদায়ী বক্তব্য কিভাবে লিখবেন?
- বিষয়বস্তু অনুযায়ী একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ তৈরি করতে হবে।
- এবার আপনার হাতে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করা হলে, এটিকে সজাতে হবে সুন্দর করে। যেন বিদায়ী বক্তব্যটি উপস্থিত লোকেরা ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারে।
- এটি করার একটি ভাল উপায় একটি রূপরেখা তৈরি করা। রূপরেখায় থাকবে স্থান, ভূমিকা, পাঠ্যের মূল অংশ এবং উপসংহার।
- আপনার বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্যের সম্পূর্ণ পাঠ্য বিষয়গুলো লিখে রাখার দরকার নেই। মূল মূল বিষয়গুলি কেবল লিখুন।
- সহজ এবং সাবলীল ভাবে শুরু করুন। রসিকতা দিয়ে শুরু হওয়া বক্তব্য সহজেই উপস্থিত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এটি বিদায় অনুষ্ঠান হিসাবে, লোকেরা খুব জটিল বা ভারী কিছু আশা করতে পারে। এমনকি অনুষ্ঠানটি হৃদয়বিদারক হলেও বক্তব্য অনেক মজাদার উপায়ে শুরু করুন। এইভাবে, আপনি একটি ভাল পরিবেশ তৈরি করুন, যেন তারা আপনাকে শুনেন।
- একটি দার্শনিক উদ্ধৃতি বা প্রেরণাদায়ী বার্তা দিয়ে বক্তব্য শুরু হতে পারে, তবে আদর্শ হবে এটি শেষ পর্যন্ত বক্তব্যের বিভিন্ন অংশে পাঠ করা।
- বিদায়ী বক্তব্য এর মূল অংশটি লিখুন। আপনার কাছে সবকিছু কেমন এবং প্রত্যেকের সাথে সম্পর্ক কেমন তা প্রকাশ করে ঔসকল ব্যক্তি এবং নিজস্ব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে গল্পগুলো বলুন।
- গল্প বলার সময় উদাহরণ তুলে ধরাটা ভালো হয়।
- বক্তব্যের উপসংহারে এমন কিছু রাখার চেষ্টা করুন যাতে উপস্থিত ব্যক্তিরা আজীবন মনে রাখবেন।
৩য় অংশ: এবার বিদায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করুন
- প্রথমে নিজেকে অনুপ্রাণিত করুন যে আপনি পারবেন। নিজের প্রতি বিশ্বাস তৈরি করার জন্য আপনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে অনুশীলন করবেন। আপনার ভংগি এবং ভাষা সবসময় ঠিক রাখতে চেষ্টা করুন।
- সবচেয়ে বেশি বিভ্রান্তি প্রদান করে এমন অংশগুলি বার বার আয়ত্ত্ব করুন।
- আয়নার সামনে দাড়িয়ে অনুশীলন করুন। আপনি লেখার দিকে না তাকিয়েই চোখ সরিয়ে নিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য দিতে পারেন কিনা, সেটা চেষ্টা করুন।
- দরকার হলে আপনার কোনও বন্ধুকে সামনে দাড়িয়ে ওর সাথে কথা বলার অনুশীলন করুন এবং তাদের আপনাকে একটি মন্তব্য প্রদান করতে বলুন।
- ছোট ছোট নোট করুন, আপনার বক্তব্য বলার মতো বেশি কিছু থাকলেও, এবং আপনি যে জায়গা ছেড়ে যাচ্ছেন সে সম্পর্কে আবগত হওয়ার জন্য অনেক আবেগ থাকলেও এটি কন্ট্রোল করুন।
- ৫-৭ মিনিটের বক্তব্যই যথেষ্ট। নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে, আপনি দশ মিনিট সহ্য করতে পারেন। এর চেয়ে বড় বিষয়, শুধুমাত্র রাজনৈতিক বক্তৃতাগুলো হয় বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানগুলিতে।
- প্রকাশ্যে কথা বলার সময় অনেকেই নার্ভাস হন, এজন্য আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলুন। আপনি যেনো নার্ভাস না হোন সে জন্য বক্তব্যটি বেশ কয়েকবার রিহার্সাল করুন এবং সবার কাছে পৌঁছানোর আগে নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করুন।
- মানুষ হিসেবে আপনার ভুল হতেই পারে। এর জন্য প্রস্তুতি নিন, এবং এটি নিয়ে বেশি চিন্তিত হবেন না। নিজেকে হাসি খুশি রাখুন এবং আপনার বক্তব্য থামাবেন না। শ্রোতারা এতে আপনাকে ভুল মনে করবে না।
- আপনার বক্ত্যব্য মনোযোগ দিয়ে শুনবে এমন লোকদের প্রতি মনোযোগ দিন। আপনার লক্ষ্য এমন সব লোকের দিকে নিয়ে যান যারা হাসছেন, মাথা ঝাঁকিয়েছেন এবং চোখের যোগাযোগ করছেন। তাদের শক্তি আপনার আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলবে।
- কথা বলার সময় চোখ বন্ধ রাখবেন না, আপনার অডিয়েন্স এর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন। আই-কন্টাক্ট ভালো হলে বক্তব্য বেশ বোধগম্য হয়।
এসব কাজ করতে আপনার দৈন্দিন কাজের পাশাপাশি সময় বের করতে হবে। সময়ে ব্যাবস্থাপনার কৌশল গুলো জেনে নিস খুব সংক্ষেপে টাইম ম্যানেজমেন্ট এর উপর লিখিত ব্লগ পড়ে।
পরামর্শ
উপস্থিত বক্তৃতা শুরু করার নিয়ম
উপস্থিত বক্তৃতা একটি কার্যকর যোগাযোগের হাতিয়ার হতে পারে। একটি ভাল উপস্থিত বক্তৃতা শ্রোতাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে, তাদেরকে নতুন কিছু শেখাতে বা তাদেরকে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।
১) আত্মবিশ্বাসী হোন: দাঁড়ান সোজা হয়ে, মাথা উঁচু করে, স্পষ্টভাবে কথা বলুন। ভয় পাবেন না, বরং শ্রোতাদের সাথে চোখের যোগাযোগ রাখুন।
২) স্বাগত জানান: শ্রোতাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণভাবে স্বাগত জানান।
৩) পরিচয় দিন: নিজের নাম, পদবী, এবং বক্তব্যের বিষয় সম্পর্কে বলুন।
৪) শ্রোতাদের আগ্রহ ধরুন: একটি আকর্ষণীয় প্রশ্ন, উক্তি, বা গল্প দিয়ে শুরু করুন।
৫) বক্তব্যের রূপরেখা দিন: আপনি কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন তা সংক্ষেপে বলুন।
৬) স্পষ্ট ও সংক্ষিপ্তভাবে কথা বলুন: সহজ ভাষা ব্যবহার করুন, জটিল শব্দ এড়িয়ে চলুন।
৭) উদাহরণ ও দৃষ্টান্ত ব্যবহার করুন: বক্তব্যকে আকর্ষণীয় করে তুলুন।
৮) শ্রোতাদের সাথে যোগাযোগ রাখুন: তাদের প্রশ্নের উত্তর দিন, মতামত জানতে চান।
৯) সমাপ্তি টানুন: আপনার বক্তব্যের মূল ভাবনার পুনরাবৃত্তি করুন।
১০) ধন্যবাদ জানান: শ্রোতাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান।
মনে রাখবেন:
- অনুশীলন আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।
- ভালোভাবে প্রস্তুত থাকুন।
- সময়ের মধ্যে বক্তব্য শেষ করুন।
- স্পষ্ট ও সাবলীলভাবে কথা বলুন।
উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে আপনি একটি সফল উপস্থিত বক্তৃতা দিতে পারবেন।
নিচে নমুনা সরূপ একটি স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানের বিদায়ী বক্তব্য তুলে ধরা হলো:
আসসালামু আলাইকুম,
সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা দিয়ে শুরু করুন।
যেমনঃ আলহামদুলিল্লাহ, সমস্ত প্রসংশা সেই মহান রাব্বুল আ-লামিন এর জন্য, অতপর স্বলাত ও সালাম বর্ষিত হোক রাসুল (সাঃ) এর উপর।
অন্য ধর্মের লোকেরা তাদের নিজেদের প্রসংশার বানী ব্যবহার করবেন।
মঞ্চে উপস্থিত প্রধান অতিথি এবং আমার শ্রদ্ধেয় সকল শিক্ষক ও আমার সামনে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের আমার পক্ষ থেকে সালাম এবং আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।
প্রিয় উপস্থিতি আজ অত্যান্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আমি “আব্দুল্লাহ” উপস্থিত হয়েছি আজকের ২০২৩ এর এই বিদায় অনুষ্টানে। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায়ের আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে বিদায় নেওয়া হয়তো সম্ভব হবে না।
অনেক দিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা গ্রহণ করছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন তা আমাদের মনে থাকবে সারা জীবন । এজন্য আমরা আমাদের শিক্ষকগনের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবো।
এখানে আপনি চাইলে আপনার শিক্ষদের সাথে ঘটে যাওয়া ছোট্ট ঘটনা যুক্ত করতে পারেন।
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে আজ অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত। পরের আরেকটি নতুন অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আমরা বিদায় নিচ্ছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি।
আমরা এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এই শাসন সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা প্রয়োজন ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণের যদি কোনো শিক্ষক শিক্ষিকা কষ্ট পেয়ে থাকেন, বা ছোট কিংবা বড় কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন।
সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমার আবেদন প্রার্থী।
যাই হোক, বিদায়ী মুহূর্তে আর বেশি কিছু বলতে চাই না, এই প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আমি আমার বক্তব্য এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে, আসসালামুয়ালাইকুম।
ছাত্রদের বিদায় অনুষ্ঠানে শিক্ষকের বক্তব্য
“বিসমিল্লাহির বহমানির রহিম।
শুরুতেই প্রশংসা সেই মহান রাব্বুল আ-লামিন জন্য এবং দরূদ ও সালাম রাসুল (সাঃ) প্রতি।
প্রিয় ছাত্রছাত্রীগণ,
আজকের এই বিশেষ দিনে, যখন তোমরা তোমাদের স্কুল জীবনের এক অধ্যায় শেষ করে নতুন জীবনে পা রাখতে প্রস্তুত, আমার মন ভরে আছে আনন্দে, বিষাদে, এবং গর্বের অনুভূতিতে।
আনন্দ, কারণ তোমরা সকলেই জ্ঞান, শিক্ষা, এবং নীতিবোধে সমৃদ্ধ হয়ে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে বিকশিত হয়েছ। তোমাদের জ্ঞানপিপাসা, তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা, এবং সৃজনশীলতা আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে।
বিষাদ, কারণ আজকের পর তোমাদের প্রতিদিন ক্লাসে দেখা হবে না, তোমাদের হাসি-মজা, গান, আড্ডা, আর টিচারদের সাথে তোমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ আর উপভোগ করা যাবে না।
গর্ব, কারণ তোমরা সকলেই তোমাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ এবং সফল হয়ে উঠবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। তোমাদের মধ্যে লুকিয়ে আছে অফুরন্ত সম্ভাবনা, যা তোমরা ভবিষ্যতে বাস্তবায়িত করবে।
আমি তোমাদের সকলকে জানাতে চাই যে, তোমাদের শিক্ষক হিসেবে আমি তোমাদের প্রতি অত্যন্ত গর্বিত। তোমাদের সকলের জন্য আমার শুভকামনা রইল।
কিছু কথা মনে রাখবে:
- জীবনে সৎ, নীতিবান, এবং মানবিক মূল্যবোধে পরিপূর্ণ হয়ে বেঁচে থেকো।
- তোমাদের জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দাও অন্যদের জীবনে।
- সাহসী হও, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করো।
- তোমাদের লক্ষ্য স্থির করো, এবং অধ্যবসায়ের সাথে এগিয়ে যাও।
- ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করো, এবং কখনোই হাল ছাড়ো না।
তোমরা সকলেই আমার কাছে অত্যন্ত প্রিয়। আমি তোমাদের সকলের জন্য শুভকামনা জানাই।
ধন্যবাদ সবাইকে, আসসালামুয়ালাইকুম।
একটি মাদ্রাসার বিদায় অনুষ্ঠানের ভিডিও বক্তব্য
উদাহরণ হিসেবে এই বোন এর ভিডিও বক্তব্যটি দেখে অনুপ্রেরণা নিতে পারেন।
নিচে নমুনা সরূপ একটি কলেজের বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য তুলে ধরা হলো বিদায়ী ছাত্রদের জন্য:
আসসালামু আলাইকুম,
সৃষ্টিকর্তার প্রশংসা দিয়ে শুরু করুন।
আমার সামনে উপস্থিত আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি, এই কলেজের সম্মানিত অধ্যক্ষ স্যার সহ আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা মহদয় এবং আমার সামনে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীদের ভাই-বোনদের আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং সালাম জানাই।
“যেতে হবে বহুদূর! তাই এই বাঁধন ছাড়া
বিরহ ভরা মনে, বইছে হাসির কাদন।
তাই আজ ছেড়ে চলেছি সকল মায়া সুসাশন,
সামনে দাড়িয়েছে তাই দিতে বিদায়ী ভাষণ।”
এই বিদায় শব্দটি যেন আরো কোন তিন অক্ষরের একটা মাত্র শব্দ নয়, হ্যাঁ সত্যিই এ যেন বুকের উপর একটা পাহাড় চেপে পড়া।
আজ দঃখ ভারাক্রান্ত মনে বুঝতে পারছি বিদায়ের ক্ষণ কি, এর গভীরতা কতটা ব্যাথাময় । আজ এমন একটি সময় যে সময়ে এ বিদায় দিতে হচ্ছে আমাদের প্রাণপ্রিয় বড় ভাই-বোনদের। ভুলে যেতে হবে তাদের স্নেহের শাসন আর ভালোবাসায় দিনগুলো।
বাস্তবতার কাছে আজ আমাদের হার মানতে হচ্ছে। যাদের পদ-চারণায় এই কলেজ প্রাঙ্গন পেয়েছিল নি:শ্বাস আজ তাদের কে বিদায় দিতে হবে।
” যেতে নাহি দিতে চাই,
তবু যেতে দিতে হয়
তবু চলে যায়। ”
এই বাক্যের কাছে নতি স্বীকার করে আজ আপনাদের বিদায় দিতে হবে,জীবনের তাড়নায়,আর সামনে এগুনোর পথে প্রশস্ত করতে,ভাইয়া-আপুরা আমরা আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত. জানিনা কতটুকু সন্মান দিতে পেরেছি আপনাদের, যদি মনের অজান্তে কখনো কষ্ট দিয়ে থাকি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আমাদের। সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমার আবেদন প্রার্থী।
আর আপনাদের জন্য আনেক অনেক দোয়া, শুভ কামনা এবং ভালোবাসা রইলো.
ধন্যবাদ সবাইকে।”
বিদায় অনুষ্টানের ব্যবহার করার মত ছন্দঃ
“বিদায়ের ঘন্টা বেজে গেছে
আর যে সময় নেই,
ভালো থেকে প্রিয় বিদ্যালয়
তোমাকে বিদায়”
সহকর্মীর বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য উদাহরন সহ তুলে ধরা হলো
“বিসমিল্লাহির বহমানির রহিম।
শুরুতেই প্রশংসা সেই মহান রাব্বুল আ-লামিন জন্য এবং দরূদ ও সালাম রাসুল (সাঃ) প্রতি।
আজকের এই বিদায় অনুষ্ঠানের প্রধান অথিতি আমাদের কম্পানির সম্মানিত এমডি স্যার, এবং অত্র কম্পানির সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ সকলের প্রতি রইলো আন্তরিক সালাম আসলামুআলাইকুম। এবং অন্যান্য জাতির প্রতি রইলো শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।
আমরা সবাই জানি যে, আজ আমাদের সহকর্মী, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কম্পানিতে কর্মরত মোঃ আশরাফুল আলম স্যারের বিদায়ী অনুষ্ঠান।
যদিও বিদায় দিতে মন চায়না,তবুও বিদায় নামক শব্দটিকে বরন করে,নতুনত্বকে আমন্ত্রণ জানাতে হয়। আজ এই বিদায়ের হাত ধরে আপনার জীবনের নতুন পথচলা, নতুন যাত্রা শুভ হোক দোয়া রইলো।
দীর্ঘদিন যাবত মো: আশরাফুল আলম স্যার আমাদের কম্পানিতে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সততার সাথে কাজ করে এসেছেন। আমাদের সকলের কর্মজীবন সব সময় একসাথে এক জায়গায় পথ চলা সম্ভব হয়না। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির জন্য উদ্ধাতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে আমাদের অন্য স্থানে বদলি হতে হয় আথবা আমাদের চাকুরীর জন্য নিদিষ্ট সময় সীমা শেষ হলে চাকুরী থেকে আবসর গ্রহণ করতে হয়। ঠিক তেমনি ভাবে মোঃ আশরাফুল আলম স্যার আমাদের মাঝথেকে চলে যাইতেছেন।
আশরাফুল আলম স্যার ছিলেন একজন ভালো, নিষ্ঠাবান মানুষ। তিনি সব সময় সততা এবং সময় সচেতনতার সাথে তার দায়িত্ব পালন করেছিলেন।আমাদের কম্পানির বিভিন্ন সাফল্যের তার অবদান আপরিসীম। তিনি নিয়মিত আফিসে এসেছিলেন। প্রতিষ্ঠানে কোন কাজের জন্য তিনি পিছিয়ে পড়েন নি,সব কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি নিজের কাজের পাশাপাশি আমাদের কাজে সহযোগীতা করেছিলেন।শুধু অফিসের কাজ নয় এর বাহিরেও, পারিবারিক ও অন্যান্য সকল সমস্যার কথা গুলো আশরাফুল স্যার শুনতেন এবং একজন সহকর্মী হিসেবে সাহায্য করতেন। এটা হতে বোঝা যায় তিনি কতটা বড় মনের মানুষ ছিলেন।
মোঃ আশরাফুল আলম স্যার সব মিলে একজন অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব, যার তুলনা হয় না।আমরা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সময়ে স্যার কে অনুসরণ করতাম। স্যারের ভালোবাসা,স্নেহপরায়ণ আচরণ আমরা কোনদিন ভুলবো না, আজ এ দিনে বিদায় না দিতে মন না চাইলেও বিদায় জানাতে হয়।
পরিশেষে এ বলতে চাই, আমরা চলার পথে কর্মজীবনে, বিভিন্ন রকমের ভুল ভ্রান্তি করেছি,জানতে অজান্তে। তাই সকলের হয়ে,আপনার কাছে থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতেছি। আমাদের ইচ্ছাকৃত এবং অনিচ্ছাকৃত সকল ভুলের আপনি মন হতে আপনি ক্ষমা করে দিবেন এবং আমরাও যেন আপনার মত সততা এবং নিষ্ঠার সাথে কর্মজীবন শেষ করতে পারি দোয়া করবেন।
এবং এই কম্পানির সবার পক্ষ হতে আপনার জন্যও দোয়া শুভকামনা রইলো, মোঃ আশরাফুল আলম স্যার আপনি যেখানেই থাকেন না কেন, সুস্থ এবং ভালো থাকবেন। আপনার পরবর্তী পথচলা হোক সাফল্যময়।
আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য এখানেই শেষ করছি, আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুক, আমিন।
উপসংহারঃ
তাহলে বন্ধুরা আজকের এই ব্লগটি থেকে আমরা জানলাম বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্য কিভাবে শুরু করতে হবে, বক্তব্য প্রদানের ধাপ এবং বিদায় অনুষ্ঠানের বিদায়ী বক্তব্য এর কিছু নমুনা। তাহলে এবার আপ্নিও মনের মতো করে লিখে ফেলুন আপনার বিদায় অনুষ্ঠানের বক্তব্যটি।
আপনার জন্য শুভ কামনা।