অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি বা অনলাইনে ইনকামের উপায়সমূহ কি কি?

অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি বা অনলাইনে ইনকামের উপায়সমূহ কি কি?

আসসালামু আলাইকুম, Blogacademy এর পক্ষ থেকে আপনাকে স্বাগতম। আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা জানবো অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি বা অনলাইনে ইনকামের উপায়সমূহ কি কি?  এই সম্পর্কে। তো চলুন শুরু করা যাক।

অনলাইন ইনকামঃ বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন মানুষ ঘরে বসে অনলাইনে কাজের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করছে। তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না বললেই চলে। কেননা আধুনিক বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ মানুষ ডিজিটাল ডিভাইসের উপর নির্ভরশীল। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ অনলাইন ইনকাম এর মাধ্যমে  নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করছে।

বর্তমান সময়ে সকালে ঘুম থেকে উঠা থেকে শুরু করে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মানুষ প্রযুক্তির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য মানুষের এই প্রযুক্তি ও অনলাইন নির্ভর মানসিকতা অনেক সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। মানুষ এখন অনেক প্রতিকূলতা অনুভব করছে। এত প্রতিকুলতার ভিতর আশার আলো এটাই যে কর্ম ক্ষেত্রে নতুন একটি সম্ভাবনা যোগ হয়েছে। তা হল- অনলাইন ইনকাম!!!

অনলাইন ইনকাম পদ্ধতিঃ অনলাইনে ইনকামের সেরা ২০ টি উপায়

১। গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

গুগল অ্যাডসেন্সঃ পৃথিবী জুড়ে অনলাইনে অর্থ উপার্জন করার একটি জনপ্রিয় উৎসের নাম গুগল অ্যাডসেন্স। বর্তমান সময়ে গুগল অ্যাডসেন্স নামটি শোনেননি এমন মানুষ খুজে পাওয়া যাবে না বললেই চলে। আমরা মাঝে মাঝে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট ভ্রমণ করি। ওয়েবসাইট ভ্রমণ করার সময় মাঝে মাঝে আমাদের সামনে কিছু বিজ্ঞাপন দেখায়।

এই বিজ্ঞাপন গুলি মূলত গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে দেখানো হয়ে থাকে। আমরা যখন ঐ সব বিজ্ঞাপন দেখি এবং আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিজ্ঞাপন গুলিতে ক্লিক করি তখন ঐ ওয়েবসাইটের মালিক কিছু টাকা পায়। এখন আপনার প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কিভাবে গুগল অ্যাডসেন্স এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করবেন তাইতো?

এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য আপনি আমাদের গুগল অ্যাডসেন্স কি? গুগল অ্যাডসেন্স থেকে কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়? এই পোস্টটি দেখে আসতে পারেন। আশা করি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়লে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন।

২। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

এফিলিয়েট মার্কেটিংঃ অনলাইন ইনকাম এর আর একটি জনপ্রিয় পদ্ধতির নাম এফিলিয়েট মার্কেটিং। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মুল কনসেপ্ট হচ্ছে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট বা পণ্য বা সেবার বিপনণে সহায়তা করা। উদাহরণস্বরূপঃ সাধারনত মানুষ কোন পণ্য বা সেবা অনলাইন থেকে কেনার আগে ঐ প্রোডাক্ট বা পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে তারপর প্রোডাক্টটি ক্রয় করে।

আপনার কাজ হচ্ছে ঐ সকল প্রোডাক্ট সমূহকে আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা। এখন কেউ যদি আপনার ওয়েবসাইট থেকে ঐ প্রোডাক্টটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আপনার বসানো এফিলিয়েট লিংক এ ক্লিক করে প্রোডাক্টটি ক্রয় করে তাহলে আপনি ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে একটি এফিলিয়েট কমিশন পাবেন। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর  মাধ্যমে মাসে মিনিমাম ৫০০-১০০০ ডলার ইনকাম করা যায়। এটাই মূলত এফিলিয়েট মার্কেটিং, প্রচলিত কথায় ঘুমিয়ে ইনকাম !

৩। অনলাইন কোর্স বিক্রির মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

অনলাইন কোর্স বিক্রির মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

অনলাইন কোর্স বিক্রিঃ অনলাইন কোর্স বিক্রির মাধ্যমেও আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। মানুষ এখন অনেক বেশি অনলাইন নির্ভর। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন মানুষ ঘরে বসে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা নিতে পারে। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির কল্যাণে আপনি খুব সহজেই বিভিন্ন মানসম্পন্ন ও চাহিদামাফিক কোর্স বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেন। এছাড়াও আপনি যদি দেশের মানুষের জন্য বিভিন্ন মানসম্পন্ন ও চাহিদামাফিক কোর্স তৈরি করে বিক্রি করেন তাহলেও আপনি অনেক ভালো ইনকাম করতে পারবেন।

৪। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ডিজিটাল মার্কেটিং অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ডিজিটাল মার্কেটিংঃ অনলাইন ইনকামের আর একটি বড় উৎস হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। কাজের অনেক সেক্টর থাকায় এবং শিখতে তুলনামূলক সহজ হওয়ার কারনে নতুনদের কাছে এই পেশাটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনি আমার ডিজিটাল মার্কেটিং কি এই পোস্টটি পড়ে আসতে পারেন। আমি আশা করি আপনি উপকৃত হবেন ইনশাল্লাহ।

৫। কন্টেন্ট রাইটিং এর  মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

কন্টেন্ট রাইটিংঃ কন্টেন্ট রাইটিং মূলত লেখালেখির কাজ। লেখালেখির মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। দিন দিন মানুষের যেমন অনলাইনের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ঠিক তেমনি কন্টেন্ট রাইটার দের চাহিদাও বাড়ছে।  ব্লগিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ইনফো প্রোডাক্ট, লিড জেনারেশন, ফেসবুক মার্কেটিং, গুগল অ্যাডসেন্স ইত্যাদি প্রয়োজনে কন্টেন্ট রাইটারের চাহিদা ব্যাপক।

এই সেক্টরে কাজ করতে চাইলে আপনার অবশ্যই লেখালেখির দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কম্পিটিশন অনেক কম হওয়ার কারনে খুব সহজেই কাজ পাওয়া যায় এই সেক্টরে। কন্টেন্ট রাইটিং শিখে আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

৬। ইউটিউব মার্কেটিং এর  মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ইউটিউব মার্কেটিংঃ বর্তমান সময়ে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের আর একটি অন্যতম পদ্ধতি হচ্ছে ইউটিউব মার্কেটিং। ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইনে ইনকাম করা যায় বলে এই সেক্টরটি দিন দিন অনেক বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে। শুধুমাত্র ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে এবং ঐ সকল ভিডিও কন্টেন্ট অনেক মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে অর্থাৎ ভিডিও কন্টেন্ট গুলোকে এমনভাবে অপটিমাইজ করতে হবে যেন অনেক মানুষ আপনার তৈরি করা কন্টেন্টটি দেখে এবং রেস্পন্স করে।

এর জন্য আপনার প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ হচ্ছে ভিডিও ক্যামেরা,মোবাইল অথবা কম্পিউটার এবং ভিডিও এডিট করার জন্য  ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। এক্ষেত্রে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি গ্রো করতে মিনিমাম ৬-১২ মাস সময় লাগতে পারে। এটা নির্ভর করবে আপনার পরিশ্রম ও ডেডিকেশনের উপর। ইউটিউব মার্কেটিং এর  মাধ্যমে আপনি প্রতি মাসে(৫০০-১০০০) ডলার বা তারও বেশি অনলাইন ইনকাম করতে পারবেন। কাজের ধরণ অনুযায়ী কম বেশি হতে পারে। এটা কিন্তু ফিক্সড না।

ইউটিউব সম্পর্কে  বিস্তারিত জানতে আমাদের ইউটিউব মার্কেটিং পোস্টটি দেখে আসতে পারেন।

৭। গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

গ্রাফিক্স ডিজাইনের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য আর একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজের পরিধি ব্যাপক। আপনি যেকোনো একটি ক্যাটাগরি তে দক্ষ হয়ে অনলাইন এবং অফলাইন দুই ভাবেই অর্থ উপার্জন করতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনে বেশ জনপ্রিয় কাজের ক্যাটাগরি গুলোর মধ্যে লোগো ডিজাইন, ব্যানার ডিজাইন, ইনফোগ্রাফি ডিজাইন, কার্ড ডিজাইন, পোস্টার ডিজাইন ইত্যাদি অন্যতম।

এই সেক্টরের চাহিদা যেমন দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে ঠিক তেমনি কম্পিটিশন ও অনেক বেশি। সৃজনশীল চিন্তা চেতনার মানুষগুলি এই সেক্টরে খুব ভালো করতে পারে। এই সেক্টরে কাজ করতে আপনার প্রয়োজনীয় উপকরণসমূহ হচ্ছে একটি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন করার জন্য Adobe Photoshop, Adobe Illustrator, Figma ইত্যাদি সফটওয়্যার এর উপর সৃজনশীল দক্ষতা।

গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে আপনি বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। জনপ্রিয় কিছু মার্কেটপ্লেস হচ্ছে ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রীল্যান্সার ইত্যাদি।

৮। ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট

ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টঃ অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জনের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হচ্ছে এই ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট সেক্টর। ওয়েবসাইট ডিজাইন মূলত ওয়েব (UI/UX) ডিজাইন । ওয়েবসাইট ডেভেলপাররা মূলত সেই ডিজাইনকৃত লে-আউটটি পরবর্তীতে ডেভেলপমেন্ট করে থাকেন এবং সেটিকে বাস্তবে রুপ দেন।

আমরা যদি গুগলে কোন ইনফরমেশন বা তথ্য জানার জন্য সার্চ করি তাহলে গুগল আমাদেরকে সাধারণত ১০ টি ফলাফল দেখায়। যার প্রত্যেকটিই এক একটি ওয়েবসাইট। সুতরাং এ থেকে আমরা এটাই বুঝতে পারলাম যে অনলাইন সেক্টর ওয়েবসাইট ছাড়া চিন্তা করা যায় না।

অর্থাৎ ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্টের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই সেক্টর তুলনামুলক ভাবে একটু কঠিন বলে কম্পিটিশন কম হয়। যার ফলে খুব সহজেই কাজ পাওয়া যায় এবং সফল হওয়া যায়।

৯। ড্রপশিপিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ড্রপশিপিং এর  মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ড্রপশিপিংঃ ড্রপশিপিং অনলাইন ইনকামের আরেকটি নির্ভরযোগ্য উপায়। অন্যের উৎপাদিত বা সর্বরাহকৃত পন্য নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রচার ও বিক্রির প্রক্রিয়াই ড্রপশিপিং।এক্ষেত্রে মানসম্মত ও চাহিদামাফিক প্রোডাক্ট নিয়ে আপনাকে কাজ করতে হবে। তুলনামূলক কম পরিশ্রমে অধিক লাভের মাধ্যম এই ড্রপশিপিং। ড্রপশিপিং নিয়ে কাজ করতে হলে আপনার অবশ্যই ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ব্যবসা সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকতে হবে।

উদাহরণস্বরূপ ধরুন আপনার আশেপাশের পরিচিত কোন একজন ব্যক্তি কোন একটি পণ্য তৈরি করে সেটা বাজারে বিক্রি করছে। যে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছে সেখানে সে প্রোডাক্টটির মূল্য ২০০ টাকা। যেখানে ঐ প্রোডাক্টটি শহরে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আবার ই-কমার্স সাইটে ঐ প্রোডাক্টটি ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর একটি উদাহরণ দেই, যেমন ধরুন, গ্রামের একজন কৃষকের কাছ থেকে সবজি প্রতি কেজি ১০ টাকায় ক্রয় করে বড় বড় শপিং মল গুলোতে তার ৩-৫ গুন চরা দামে বিক্রি হচ্ছে নিয়মিত। এই টেকনিক টি আপনি আপনার ই-কমার্স (E-Commerce) ব্যবসা তে কাজে লাগাতে পারেন। ইহাই মূলত ড্রপশিপিং!!!

১০। সিপিএ মার্কেটিং এর  মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

সিপিএ মার্কেটিং

সিপিএ মার্কেটিংঃ অনলাইন ইনকামের আর একটি জনপ্রিয় উপায় হচ্ছে সিপিএ মার্কেটিং। সিপিএ এর ফুল মিনিং হচ্ছে “কষ্ট পার অ্যাকশন”। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর একটি অংশ হচ্ছে সিপিএ মার্কেটিং। সিপিএ মার্কেটিংকে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে তুলনা করা যায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সময় যেমন প্রোডাক্ট বিক্রি করার পরে কমিশন লাভ করা যায় ।

অপরদিকে সিপিএ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে প্রোডাক্ট বিক্রি না করেও প্রতিটি নির্দিষ্ট অ্যাকশনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যায়। এখানে নির্দিষ্ট অ্যাকশন বলতে লিড জেনারেশন তথা ফরম পুরন,ই-মেইল সাইনআপ,অ্যাপস ইন্সটল করা সহ আরও অনেক কিছু হতে পারে। প্রতিটি নির্দিষ্ট অ্যাকশনের জন্য আপনি (০.৫০-১০) ডলার পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

১১। ডাটা এন্ট্রি এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ডাটা এন্ট্রি এর  মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ডাটা এন্ট্রিঃ অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করার আর একটি সহজ উপায় হচ্ছে ডাটা এন্ট্রি। এই সেক্টরের মাধ্যমে আয়ের পরিমাণ যেমন কম ঠিক তেমনি কাজের পরিমান ও কম। যাদের কম্পিউটার সম্পর্কে ব্যাসিক ধারণা আছে এবং টাইপিং এ দক্ষতা ভালো তারা শুরুর দিকে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জনের জন্য এই সেক্টর টি বেছে নিতে পারেন।

ডাটা এন্ট্রি কাজ গুলোর মধ্যে MS-Word To Excel, PDF Conversion,CRM Data Entry, Image To Word ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ডাটা এন্ট্রির কাজ শিখে আপনি বিভিন্ন জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস যেমনঃ ফাইভার, আপওয়ার্ক, ফ্রীল্যান্সার ইত্যাদিতে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

১২। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর  মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। যোগাযোগ ও বিনোদনের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া অন্যতম। বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া  যেমনঃ ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডিন, ইন্সটাগ্রাম, পিন্টারেস্ট,রেডিট,স্ন্যাপচ্যাট ইত্যাদি।

কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে, যোগাযোগ ও বিনোদনের পাশাপাশি এসব মিডিয়া ব্যবহার করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। বিভিন্ন ছোট- বড় কোম্পানি তাদের পণ্যের প্রচার-প্রচারণার জন্য এসব মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে। দেশি-বিদেশি অনেক কোম্পানি থাকার কারনে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটরের চাহিদা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।

অধিক ফলোয়ার সমৃদ্ধ আপনার যদি বেশ কিছু ফেসবুক পেজ থাকে তাহলে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন কোম্পানি আপনার সাথে নিজে থেকেই যোগাযোগ করবে।  আপনি এসব বিজ্ঞাপন সংস্থার সাথে কাজ করে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ফ্যান ফলোয়ার তৈরি করা থেকে শুরু করে তাদেরকে ধরে রাখতে খুবই ধৈর্যশীল এবং সতর্কবান হতে হয়।

১৩। ছবি বিক্রি করে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ছবি বিক্রি করে অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ছবি বিক্রিঃ কিছু কিছু মানুষ শখের বসে ফটোগ্রাফি করে। ঐ মানুষ গুলি ফটোগ্রাফি করতে খুব পছন্দ করে। কিন্তু তারা এটা জানে না যে ফটোগ্রাফি করেও অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করে নিজেকে স্বাবলম্বী করা যায়। ছবি বিক্রি করে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন কঠিন কোন বিষয় না।

আপনাকে শুধু বিভিন্ন আকর্ষণীয় ছবি তুলতে হবে এবং ঐ ছবি গুলি ফটো এডিটিং সফটওয়্যার এর মাধ্যমে এডিট করে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। ফটো এডিটিং সফটওয়্যার এর মধ্যে অ্যাডোবি ফটোশপ, অ্যাডোবি ইলাসট্রেটর অন্যতম। আপনার ছবিটি আকর্ষণীয় এবং চমকপ্রদ হলে এক একটি ছবি বিক্রি করে (৫০-১০০) ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। একটু ভালো ভাবে গুগল রিসার্চ করলে আপনি ছবি বিক্রি করার জন্যে অনেক ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। এদের মধ্যে shutterstock.com, freepik.com, adobestock.com, envato.com অন্যতম।

১৪। প্রিন্ট অন ডিমান্ড ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

প্রিন্ট অন ডিমান্ড

প্রিন্ট অন ডিমান্ডঃ ডিজাইন করা যদি আপনার শখ হয়ে থাকে এবং আপনার তৈরি করা ডিজাইন গুলো যদি আকর্ষণীয় এবং চমকপ্রদ হয় তাহলে এই সেক্টর থেকে অর্থ উপার্জন করা আপনার জন্য সহজ হবে। আপনার ডিজাইন করা টি-শার্ট, মগ, ওয়ালেট ইত্যাদি যদি ক্রেতা দের কে আকৃষ্ট করতে পারে তবে সেখান থেকে প্রতিটি পণ্যের বিক্রয়মূল্য থেকে আপনি কমিশন পাবেন। গুগলে সার্চ করলে অসংখ্য প্রিন্ট অন ডিমান্ড সাইট পাবেন। printful.com তার মধ্যে একটি।

১৫। বর্তমান সময়ে অনলাইনে পড়িয়ে অর্থ উপার্জন

অনলাইন টিউটর

অনলাইন টিউটরঃ গত দুই বছর ধরে করোনা ভাইরাসের  প্রাদুর্ভাব আমরা হারে হারে টের পাচ্ছি। শিক্ষা ব্যবস্থাতেও এর প্রভাব পড়েছে। তবে বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে যে বিষয়টি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সেটি হলো অনলাইন ক্লাস। আর এই অনলাইন ক্লাস করিয়ে থাকে অনলাইন টিউটররা। ঘরে বসে এখন যেকোনো বিষয়ে শিক্ষা নেওয়া যায়। আপনি যদি কোন বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের কে পড়িয়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

বর্তমান বিশ্বে ৫০ শতাংশ অনলাইন টিউটর এখন ঘরে বসে অনলাইনে বিভিন্ন উপায়ে শিক্ষা দিচ্ছেন। অনলাইনে পড়ানো  হয় এমন বেশ কিছু প্লাটফর্ম বর্তমানে আমাদের দেশেও আছে। তাদের মধ্যে রবি টেন মিনিট স্কুল বেশ জনপ্রিয়। তাদের থেকে ধারণা নিয়ে আপনিও আপনার অনলাইন টিউটর জার্নি শুরু করে দিতে পারেন। শুরুতে কিছু বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হলেও পরবর্তীতে ভালো সুবিধা করতে পারবেন।

১৬। ই-কমার্স বিজনেসের মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ই-কমার্স বিজনেস

ই-কমার্স বিজনেসঃ ইলেকট্রনিক কমার্স  এর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে ই-কমার্স। সহজ বাংলা ভাষায় বললে “অনলাইন দোকান”। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ই-কমার্স বিজনেস বেশ প্রচলিত। ই-কমার্স বিজনেসের মাধ্যমে এখন অনেক মানুষ অনলাইনে ইনকাম করছে।

আপনি নিজের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট লঞ্চ করে শুরু করে দিতে পারেন আপনার অনলাইন বিজনেস। রাখতে পারেন বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রোডাক্ট।পণ্যের প্রচার ও প্রচারনার জন্য শিখে নিতে পারেন ডিজিটাল মার্কেটিং।

১৭। ডোমেইন কেনা বেচার মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ডোমেইন ফ্লিপিং অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি

ডোমেইন ফ্লিপিংঃ ডোমেইন কেনা বেচার মাধ্যমে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন একটি অত্যন্ত লাভ জনক ব্যবসা। নিস বা যেকোনো টপিকের উপর এক্সজেট ম্যাচ ডোমেইন গুলো কম টাকায় কিনে পরবর্তীতে বেশি টাকায় বিক্রি করাই ডোমেইন কেনা বেচার এর মুল উদ্দেশ্য।

তবে এর জন্য দরকার পর্যাপ্ত রিসার্চ করার দক্ষতা। এখন আপনি যদি অনলাইন সেক্টরে নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আপনার মনে একটি প্রশ্ন আসতে পারে। আর সেটি হল ডোমেইন আবার কি জিনিস? ডোমেইন হচ্ছে এমন একটি নাম বা ঠিকানা যা ওয়েবসাইট তৈরিতে ব্যবহৃত। যেমনঃ facebook.com, twitter.com, linkedin.com, youtube.com, google.com ইত্যাদি হচ্ছে এক একটি প্রতিষ্ঠানের নাম বা ঠিকানা অথবা ডোমেইন।

১৮। SEO এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম

SEO এর মাধ্যমে অনলাইন থেকে ইনকাম

SEO: Search Engine Optimization এর সংক্ষিপ্ত রুপ হচ্ছে SEO। একটি ওয়েবসাইটকে গুগলের টপ পজিশনে নিয়ে আসার জন্য যেসব কাজ করা হয় তাই এসইও। বর্তমান সময়ে সবাই নিজের ওয়েবসাইটকে গুগলে র‍্যাঙ্ক করতে চায়। এসইও করার মাধ্যমে যেকোনো ওয়েবসাইটকে গুগলের টপ পজিশনে নিয়ে আসা যায়। যেমন ধরুনঃ আপনি গুগলে “Best Web Development Company In Bangladesh” লিখে সার্চ করলেন।

এক্ষেত্রে গুগল আপনাকে প্রথম পেজে প্রায় ১০ টির মত ফলাফল দেখায়। ইন্টারনেটে তো হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ওয়েবসাইট আছে  তাদের মধ্যে কেন এই সব ওয়েবসাইটকে গুগল প্রথম পেজে দেখাল। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন তো । এই কাজটি মূলত করা হয় এসইও এর মাধ্যমে। যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির ওয়েবসাইট এসইও করার মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

SEO সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আপনি আমাদের পূর্বের পোস্টটি পড়ে আসতে পারেন।

১৯। প্রেজেন্টেশন মেকিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

প্রেজেন্টেশন মেকিং

প্রেজেন্টেশন মেকিংঃ প্রেজেন্টেশন মেকিং এর মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস থেকে অর্থ উপার্জন যায়। মার্কেটপ্লেসের  পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রেজেন্টেশনের কাজ করে ভালো মানের অর্থ উপার্জন করা যায়। আপনার যদি চাহিদা এবং গুনগত মানসম্পন্ন প্রেজেন্টেশন বানানোর দক্ষতা থাকে তাহলে এই সেক্টরে আপনি ভালো করতে পারবেন।

এই সেক্টরে কম্পিটিশন কম হওয়ার কারনে কাজ সহজে পাওয়া যায় এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যায়। বিভিন্ন ছোট বড় কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানে প্রেজেন্টেশন মেকিং সেবা প্রদান করার জন্য আপনি প্রেজেন্টেশন মেকিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারেন এবং অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

২০। ফরেক্স ট্রেডিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ফরেক্স ট্রেডিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম

ফরেক্স ট্রেডিংঃ বর্তমান সময়ে ফরেক্স ট্রেডিং এর মাধ্যমে অনলাইন ইনকাম তুলনামুলক সহজ প্রক্রিয়া। সহজ ভাষায় যদি বলি, ফরেক্স ট্রেডিং হল মূলত বৈদেশিক মুদ্রার ক্রয় বিক্রয় প্রক্রিয়া। ফরেক্স মার্কেটে আপনি আপনার দেশের মুদ্রা বিক্রি করে অন্য একটি দেশের মুদ্রা ক্রয় করতে পারেন। এখন হয়তোবা আপনি ভাবছেন ফরেক্স ট্রেডিং করে আমার লাভ কি? এই প্রশ্নটির উত্তর চলুন জেনে নেই। আমরা জানি, প্রতিটি দেশের মুদ্রার মান ক্রমাগত পরিবর্তনশীল। যেমন ধরুনঃ বাংলাদেশি টাকা এবং ডলারের মূল্য ক্রমাগত পরিবর্তনশীল।

মাঝে মাঝে দেখবেন অ্যামেরিকান ১ ডলারের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় ৮৪ টাকা আবার মাঝে মাঝে দেখবেন অ্যামেরিকান ১ ডলারের মূল্য ৮০ টাকা(প্রায়)। যখন ডলারের মূল্য কম থাকে তখন অ্যামেরিকান ডলার কিনে রাখলে পরে যখন ডলারের মূল্য বাড়বে তখন বিক্রি করলে পার ডলারে ৩-৪ টাকা লাভ করা যায়। এভাবেই মূলত ফরেক্স ট্রেডিং কাজ করে থাকে। নোটিস বোর্ডঃ ফরেক্স ট্রেডিং এর জন্য ইনভেস্টমেন্ট করার মন মানসিকতা থাকতে হবে।

আমাদের শেষ কথা

“ঘরে বসে আয় করি নিজেই নিজের কর্মসংস্থান গড়ি”

বর্তমান সময়ে বেশ প্রচলিত একটি শব্দ অনলাইন ইনকাম। করোনা মহামারী সময়ে, লক্ষ লক্ষ বেকার মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এক্ষেত্রে অনলাইন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ইনকাম সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। এখন এই সেক্টরে অনেকে কাজ শিখছে আবার অনেকে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। প্রযুক্তির কল্যাণে সেটা সম্ভব হয়েছে।

আমাদের বাংলাদেশের অনেক ফ্রীল্যান্সার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ফ্রীল্যান্সারদের সাথে কম্পিটিশন করে ঘরে বসে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান গড়ছে। আমরা এই পোস্টটির মাধ্যমে অনলাইন ইনকামের ২০ টি  সেরা উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। এখন সিদ্ধান্ত নেবার পালা আপনার। আপনি আপনার ক্যারিয়ারকে কিভাবে ডেভেলপ করবেন তা আপনাকেই খুজে বের করতে হবে।

তো আজকে এই পর্যন্তই। অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি বা অনলাইনে ইনকামের উপায়সমূহ নিয়ে কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, আমাদেরকে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

আর হ্যা, এই আর্টিকেলটি যদি আপনার সামান্যতম উপকারে আসে তাহলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন।আপনার অনলাইন যাত্রা শুভ হউক।

–  ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *